Sunday, February 2, 2025

জ্যোতির্ময় রায়, আমার জ্যোতিদা

জ্যোতির্ময় রায়, আমার জ্যোতিদা

অশোকানন্দ রায়বর্ধন

বয়সে ছোটো হলেও জ্যোতির্ময়দাই  ডাকতাম আমি । তিনিও আমাকে অশোকদাই ডাকতেন । বছর দশেক আগে আগরতলার বইমলায় আমার সঙ্গে পরিচয় ধর্মনগরের আমার কবিবন্ধু এবং লোকসংস্কৃতিপ্রাণ লংম্যান সমর চক্রবর্তীর মাধ্যমে । জীবনের শেষভাগে এসে এক অমায়িক মানুষের সঙ্গে পরিচিত হলাম আমি । তারপর পরিচয় ক্রমে বয়সের বাধা এড়িয়ে বন্ধুত্বে পরিণত হয়েছে । বহু অনুষ্ঠানে আমরা একসঙ্গে মঞ্চে বসেছি । আলোচনায় অংশ নিয়েছি । আমার লেখা তিনি বরাক উপত্যকায় প্রকাশের ব্যবস্থা করেছেন ।  তাঁর সম্পাদিত প্রজন্মচত্বরে আমার কবিতা ছেপেছেন । ৭–৮ জানুয়ারি ২০২৩শিলচরে নন্দিনী সাহিত্য ও পাঠচক্রের উদ্যোগে আয়োজিত নবম উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় লিটল ম্যাগাজিন সম্মেলনে আমাকে গোপেশ চক্রবর্তী নিয়ে গিয়েছিলেন তাঁর জলীয় সংবাদের প্রতিনিধি করে । শিলচর স্টেশন থেকে দেবদূত মোড়ের সন্নিকটে হোটেল কল্পতরুতে টুকটুকে চড়ে পৌঁছানোর দায়িত্ব অত্যন্ত সুন্দরভাবে গুছিয়ে নিয়েছিলেন প্রজন্ম চত্বর সম্পাদক জ্যোতির্ময় রায়দাদা । সেবারে আসতে যেতে ট্রেনে কী জমাট আড্ডা । ভুলি কি করে ! লিটল ম্যাগ নিয়ে আমরা দুজন পাশাপাশি বসেছিলাম ।  জ্যোতির্ময়দার পরিচিতি বিশাল । যাঁর সঙ্গেই কথা বলতেন আমাকে পরিচয় করিয়ে দিতেন তাঁর সঙ্গে । তারপর তাঁর শারীরিক অসুস্থতার সংবাদও পেয়েছি । চিকিৎসার পর ফিরে এসেছেন । একদিন আমরা মাঝদুপুরে নিবিড় আড্ডা দিয়েছিলাম আইজিএম চত্বরে । মাঝে নাট্যব্যক্তিত্ব সুভাষ দাসও কাটিয়ে গেছেন কিছু সময় । অসুস্থ মানুষ অথচ চিকিৎসার জন্য নিয়ে এসেছেন তাঁর শ্যালককে । নিজের শারীরিক কষ্ট ভুলে এতটা দায়িত্বপূর্ণ তিনি । এই মানুষটাই এবছর এগারো জানুয়ারি আমার জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়ে দীর্ঘায়ু কামনা করে স্বয়ং চলে গেলেন অনন্তভ্রমণে । এ কেমন কথা জ্যোতির্ময়দা !

No comments:

Post a Comment