Showing posts with label শব্দচর্চা. Show all posts
Showing posts with label শব্দচর্চা. Show all posts

Monday, September 26, 2022

মহালয়া

মহালয়া এক বিশেষ তিথি ৷ মহালয়া বলতে বোঝায় পিতৃপক্ষের শেষ এবং দেবীপক্ষের শুরু ৷ পিতৃপক্ষ সূচিত হয় প্রধানত দক্ষিণ ও পশ্চিম ভারতে গণেশ উৎসবের পরের পূর্ণিমা তিথিতে ৷ শেষ হয় অমাবস্যা তিথিতে ৷অপরদিকে উত্তরভারত ও নেপালে ভাদ্রের পরিবর্তে আশ্বিন মাসের কৃষ্ণপক্ষকে পিতৃপক্ষ বলা হয় ৷ সংস্কার অনুযায়ী ভাদ্রমাসের কৃষ্ণা প্রতিপদ তিথি থেকে আশ্বিনের কৃষ্ণা পঞ্চদশী অর্থাৎ অমাবস্যা তিথি পর্যন্ত সময়কে বলা হয় পিতৃপক্ষ বা প্রেতপক্ষ বা অমরপক্ষ ৷ হিন্দু পুরাণ অনুযায়ী, এই সময় প্রেতলোক থেকে পিতৃপুরুষবর্গের আত্মারা মর্ত্যলোকে নেমে আসেন নিজেদের ফেলে যাওয়া গৃহ ও পরিজনের প্রতি মায়াবশত ৷ মহালয়ায় তাঁরা সকলে মরজীবনের পরিবেশে ফিরে আসেন বলে অর্থাৎ তাঁদের বিদেহী আ়ত্মারা ফিরে আসেন বলেই তাঁদের জীবিত উত্তরপুরুষেরা সেই দিনটিতে তর্পনের দ্বারা তাঁদের বিদেহী আত্মার পরিতৃপ্তি বিধান করে প্রতিটি গৃহেই আনন্দোৎসব পালন করে থাকেন ৷ ' আলয় ' যেদিন 'মহ' অর্থাৎ আনন্দমুখর হয়ে ওঠে সেই দিনটাকেই বলাহয় 'মহালয়া' ৷ 
এতে বোঝা যায় যে মহালয়া হলো পূর্বপুরুষের পুজো বা প্রেতপুজোর এক বিশেষ তিথি ৷ এই পূর্বপুরুষ পুজো বা প্রেতপুজো মানবসংস্কৃতির ইতিহাসে মানুষের আদিম বিশ্বাসের সঙ্গে বহু প্রাচীনকাল থেকে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে ৷
পুরাণকাহিনিতে আছে, মহাভারতের যুদ্ধে কর্ণ যখন মৃত্যুমুখে পতিত হন তখন তাঁর আত্মাকে খাদ্য হিসেবে গহনা নিবেদন করা হয় ৷ কর্ণ বিস্মিত হয়ে এর কারণ অনুসন্ধানের জন্যে দেবরাজ ইন্দ্রের শরণাপন্ন হন ৷ ইন্দ্র জানান যে, কর্ণ তাঁর জীবদ্দশায় কখনো পূর্বপুরুষের প্রতি খাবার, জল ইত্যাদি উৎসর্গ করেন নি ৷ উপরন্তু দাতাকর্ণ শুধুমাত্র সোনাই দান করে গেছেন আজীবন ৷ আর তাঁর সেই কর্মফলের কারণেই তাঁর ক্ষেত্রে তারই প্রতিফলন ঘটেছে ৷ কর্ণ এই বিষয়টা জানতেন না বলে তাঁকে পনেরো দিনের জন্যে মর্ত্যে প্রত্যাবর্তনের সুযোগ দেওয়া হয়েছিলো যাতে তিনি তাঁর পূর্বপুরুষদের জল ও খাবার উৎসর্গ করতে পারেন ৷ হিন্দু পুরাণ মতে, এই পিতৃপক্ষ সময়কালে তিন পূর্ববর্তী প্রজন্মের আত্মা পিতৃলোকে ( স্বর্গ ও মর্ত্যের মাঝামাঝি) অবস্থান করেন ৷ পরবর্তী প্রজন্মের কারও মৃত্যুর পর যমরাজা আত্মাকে পিতৃলোকে নিয়ে যান এবং প্রথম প্রজন্ম স্বর্গলোকে উন্নীত হয় ৷
পুরাণ মতে এদিন দেবী দুর্গার আবির্ভাব ঘটে ৷ অশুভ অসুরশক্তির কাছে পরাভূত দেবতারা স্বর্গলোক থেকে বিতাড়িত হন ৷ চারদিকে অশুভ শক্তির আস্ফালন ৷ এই অশুভ শক্তিকে বিনাশ করার লক্ষ্যে দেবতারা সমবেত হন ৷ অসুরশক্তির বিনাসে তাঁরা এক মহাশক্তির আবির্ভাবের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন ৷ দেবতাদের তেজোরশ্মি থেকে আবির্ভূত হলেন অসুরদলনী দেবী দুর্গা ৷ মহালয়ার কাল হলো ঘোর অমাবস্যা ৷ দেবী দুর্গার আবির্ভাবে তাঁর মহাতেজের জ্যোতিতে সেই অমাবস্যা দূরীভূত হয় ৷ প্রতিষ্ঠিত হয় শুভ শক্তির ৷ অসুরবিনাশিনী দেবী দুর্গা স্বর্গ, মর্ত্য ও পাতাল তথা ব্রহ্মান্ডের অর্থাৎ 'মহানিকেতন'র অধিশ্বরী ৷ তাঁরই আগমনী তিথির নাম 'মহালয়া'

Saturday, February 29, 2020

'কুম'

    'কুম' গভীর খাত অর্থে ৷ 'কুম্ভ' থেকে কুম ৷ কলসি আকৃতির নদীগর্ভ থেকে এই নামের উৎস ৷ পুকুরে বা জলাশয় কলসি ডুবিয়ে যখন জল সংগ্রহ করা হয় সেসময় কলসির মুখ ছোটো থাকায় জল অনেকটা কুন্ডলী পাকিয়ে কলসিতে প্রবেশ করে ৷ প্রবেশমুখ ছোটো থাকায় এবং ভেতরে অনেকটা বিস্তৃত জায়গা থাকায় দ্রুত জল অপসারণের কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয় ৷ নদীগর্ভেও ভূতলে যদি গভীর কোনো গহ্বরের সষ্টি হয় সেখানেও নদীর জল দ্রুত নিচের দিকে নামার কারণে উপরে জলঘূর্ণির সৃষ্টি হয় ৷ এই জায়গায় নদীর গভীরতা বিশ-ত্রিশ হাত বেশি হয় ৷ এইজাতীয় জায়গাগুলো বিপজ্জনক ৷ জলের পাকে পড়ে মনুষ্য, গবাদি পশু ও নৌকাডুবি ঘটে থাকে ৷ মঙ্গলকাব্যখ্যাত 'কালীদহ' এইধরনের খাতের উদাহরণ ৷