রান্নাঘরের একপাশে জলের কলসি রখার স্থান ৷ মূল শব্দ 'কুম্ভস্থল' ৷ কুম্ভস্থল>কুম্ভথল>কুম্ভঅল>কুম্ভল>কুম্বল>কুম্বলা/কুম্বুলা এইভাবে পরিবর্তিত হয়েছে শব্দটি ৷ গ্রামাঞ্চলে এখনও রান্নাঘরের একপাশে এই জিনিসটি দেখা যায় ৷ এটি মাটির তৈরি উঁচু বেদীবিশেষ ৷ অনেকটা তুলসীবেদীর মতো ৷ তবে ধারের দিকে কোনো ধাপ থাকেনা ৷ সরাসরি উপরের দিকে উঠে যায় ৷ বেদীর গোড়ার দিক থেকে উপরের দিকটা কিঞ্চিৎ সরু ৷ উপরিতলটা দেখতে অনেকটা উল্টো করে রাখা জলচৌকির চারটে পায়ার মতো খাঁজ করা ৷ পর পর গড়ে তোলা লম্বা বেদীর এই খাঁজগুলোতে কলসি সাজিয়ে রাখা হয় ৷ একসময় এই মাটির বেদীর দেয়ালে নক্সা করেও রাখা হত ৷ উল্লেখ্য এই কুম্ভস্থল নোয়াখালি, চট্টগ্রাম অধ্যুষিত জনপদেই পরিলক্ষিত হয় ৷ বর্তমানে এই ব্যবস্থা অবলুপ্তির পথে ৷ এটাও আমাদের লৌকিক ঐতিহ্যের নিদর্শন ৷
Sunday, December 30, 2018
Wednesday, December 26, 2018
আঙুল
আঙুল কেটে কলম বানিয়ে যে রক্তের আখর লিখেছো প্রান্তিক কবি
তার পাঠ হবে কোন পাঠশালায়
কবে আর সেই পাঠ নিয়ে ভূমধ্যরেখার দুই পাশে বানাবো বিনম্র বাগান ৷ যেখান থেকে ফোটা ফুলের সৌরভ ছড়াবে দশদিগন্তের
পাতার কুটির থেকে আকাশমিনারে
কবির আঙুল কবে যে নির্দেশক হয়ে উঠবে প্রেমের পদাবলিতে
Monday, December 24, 2018
সময় গেলে সাধন
অভিমানী পাখি উড়াল দেওয়ার পর
মুর্শিদ খাঁচার খোলা ঝাঁপের সামনে দাঁড়িয়ে ময়নাতদন্ত করেন
মুর্শিদ তত্ত্বকথা ঘেঁটে দৈবশব্দ নিঃসরণ করেন, খাঁচাটা সোনার ছিলনা ৷
আহা, কী কী অপূর্ব কথন
'মহিম বাতাস কর' ৷
Friday, December 14, 2018
হটিকীর্তন
শ্রীহট্টীয় সংস্কৃতির অঙ্গ হিসেবে শ্রাদ্ধবাসরে গীত যমকীর্তন আর আমাদের হটিকীর্তন দুটোরই পরিবেশন প্রক্রিয়া ভিন্ন ৷ কিন্তু একই উদ্দেশ্য ফল্গুধারার মতো অলক্ষ্যে প্রবাহিত ৷ গোষ্টলীলার বিষয়বস্তুতে যেমন মায়ের সঙ্গে সন্তানের ক্ষণিক বিচ্ছেদবেদনার আবহ রয়েছে তেমনি নিমাইয়ের সন্ন্যাসযাত্রাও এক বিচ্ছেদবিধূর কাহিনি ৷ তেমনি ভাগ্যদোষে রাজা হরিশ্চন্দ্রেরও স্ত্রীপুত্র থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে শ্মশানচন্ডালের জীবিকায় দিনযাপনও বেদনাঘন ৷ শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে এই পালাগুলো নির্বাচনের মধ্যেও অনির্দেশের পথে চলে যাওয়া প্রিয়জনের জন্যে বেদনার সুরটিই ধ্বনিত ৷ সেই বেদনার প্রকাশের প্রতীকী রূপ এই জাতীয় সংগীত ৷ স্থান ভেদে প্রকাশভঙ্গি হয়তো আলাদা কিন্তু অভিপ্রায় এক ৷
Thursday, December 13, 2018
দুটি কবিতা
হিমঘর
-------------------------------------
অঘ্রাণবিধূর কুয়াশাপিয়ানো, তোমার করুণ মূর্ছনায় আমাকে কাঁদিও ৷
কোমল ঝরনার স্বচ্ছ গভীরের নুড়ির চলন যেন দিকভুল
করে থমকে যায়
নোঙর
-------------------------------------------
সামনে খ্রিস্টমাস ৷
দিঘল ছায়ার গীর্জা মূক হয়ে আছে
ঝাউবনের পাশে ৷
বাতাস হিমস্নান মিশিয়ে পথ খুলে রেখেছে
কুমারী মেরির জন্যে ৷
ভালোবাসাভর্তি একটা নৌকো
সহসাই নোঙর করার কথা
দুখি মানুষ সব, পারে এসে দাঁড়াও
Wednesday, December 12, 2018
সাপকথা
সাপ অথবা সাপিনী সকলেই গহ্বরগামী
সকলেই রোদে পিঠ দিয়ে রামধনু রঙ ঠিকরে দেয়
মনে হয় ওদের ঈর্ষা আর ক্রোধ ক্রমাগত
থেমে আসে শীতের হিমকাতর ঋতুচুমুতে
আগাম হিমের সংকেত বোঝে এইসব সরীসৃপ
তাই কন্দরের সন্ধানে দৌড়ঝাঁপ শুরু করে
যেহেতু ছলম পাল্টাবার পর শরীর নাবাল হয়
অস্ফুট বাগদান সেরে নেয় উষ্ণ ভূতাপে
আগামী বসন্তে যুগনদ্ধ হবার সাধ লালন করে পরস্পর
Thursday, December 6, 2018
আমার একটা অভিজ্ঞতা আছে ৷ বিলোনিয়াতে ট্রেনে চড়ার ৷ উনিশ শো তিয়াত্তর সাল ৷ আমি তখন বিলোনিয়া কলেজে পড়ি ৷ মাত্র কদিন আগে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে ৷ একদিন আমরা কলেজের প্রায় ত্রিশ জন ছাত্র কলেজ ফাঁকি দিয়ে এপারের বিলোনিয়া সীমান্ত পেরিয়ে ওপারের বিলোনিয়া স্টেশনে পৌঁছাই ৷ সেখানে একটা বড়ো কুলগাছ ছিল ৷ সবাই মিলে গাছের কুল ধ্বংস করার পর রেললাইন ধরে হেঁটে হেঁটে ফুলগাজি বাজারে গিয়ে উঠি ৷ আমাদের দলের নেতৃত্বে ছিলেন মানিকদা, মানিক মুহুরী ( চৌধুরী) ৷ তাঁর তখন খুব জনপ্রিয়তা ৷ বাংলাদেশ মুক্তি যুদ্ধের সময় তিনি এপারের যুবশক্তির আইকন ৷ মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করেছিলেন নানাভাবে ৷ ফলে ওপারের লিডারদের তিনি শ্রদ্ধা ও স্নেহের পাত্র ছিলেন ৷ আমরা যখন দল বেঁধে মানিকদার সঙ্গে পরশুরাম বাজারে পৌঁছাই তখন সেখানকার আওয়ামি লিগের নেতারা মানিকদা ও আমাদের দারুণভাবে আপ্যায়ণ করেন ৷ কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরির পর আমরা ট্রেনে চড়ে আমাদের সীমান্তঘেঁষা বাংলাদেশের বিলোনিয়া স্টেশনে এসে নামি ৷ তখন ট্রেনের ইঞ্জিনটা সীমান্তের নো ম্যানস ল্যান্ড ঘেঁষে থামত ৷ আমরা এপারের বাঁধের উপর থেকে এ দৃশ্য দেখতাম ৷ তার পরেও অনেকদিন পর্যন্ত ট্রেন এখানে আসত ৷