Monday, January 21, 2019

শেষবেলা


বিকেলের ডাকে যে চিঠি আসবে
তাতে ভ্রূণসন্ধ্যার সিঁদুর মাখিয়ে
সারাটা পরিক্রমার নিখুঁত দিনলিপি
গাঁথার পর খামবন্দী করে তারিখের
মোহরচিহ্নে প্রত্যয়িত করার কথা

সাতকাহনে সাজার পর অন্ধসন্ধ্যায়
বলে দেবে,তুমি ঘরে ফিরে যাও
তোমার বেলা বহুক্ষণ আগেই শেষ ৷

Saturday, January 19, 2019

সুপ্রভাত প্রিয়সুজনগণ,
  গতকাল পেরিয়ে এলাম বয়সের বাষট্টিতম সিঁড়ি ৷ অজস্ৰ শুভেচ্ছা আমাকে জীবনের জন্যে আরো বেশি ব্যাকুল করে তুলেছে ৷ এতো ভালোবাসা, এতো স্নেহ, এতো মায়া, এতো মমতা ৷ জেগে আছে এতো প্রেম !  হ্যাঁ তো ৷ এরই জন্যে আমরা জেগে থাকি অনন্তকাল ৷ আমাদের একে অন্যের অন্তরের ভেতর ৷ বোধের ভেতর ৷ নিভৃত হৃদয়ের কথা চালাচালিতেই আমাদের যাপনসূচী ৷ যতো বেশি আমরা পরস্পর নৈকট্যের, সান্নিধ্যের, নিবিড় মায়াঘনতার অভিলাষী হই, ততোই আমাদের পরস্পরের হৃদিবাতায়নের, ঝরোখার মুক্তপথ বেয়ে প্রবাহিত হয় মরমি বাতাস ৷ সে বাতাস বসন্তের নির্ধারিত আবহবাহী না হয়েও শান্তির জন্যেই বয়ে অবিরাম ৷ শান্তিই আমাদের অভীপ্সা , শান্তিই আমাদের দিকনির্দেশ ৷
   এতো বার্তায় মুখর হয়ে আমার ইনবক্সের হৃদয় আর প্রোফাইলের দেয়াল যে আমি বিমূঢ় কৃতজ্ঞ প্রতিটি আত্মীয়সম প্রাণের কাছে ৷ অথচ বার্তাবাহী এই আধুনিকতম মাধ্যম আজ দুদিন আমাকে সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে চলেছে ৷ যথাসময়ে কারোরই শুভেচ্ছার প্রত্যুত্তর করতে পারিনি ৷ এক অনিচ্ছাকৃত অপারগতায় ভুগেছি সারাক্ষণ ৷ একটু আগে শীতের কুয়াশা ঝেড়ে যখন সূর্যদেব উঁকি দিচ্ছেন আমার এই পল্লীসুবাসিত মহকুমা শহরে, মনের কোটরে নড়াচড়া করা বেদনার কথাটা পাড়লাম সুপ্রিয় ও স্নেহভাজন ছাত্র রাজ্যের প্রতিশ্রুতিমান সাংবাদিক প্রতাপ বনিকের কাছে ৷ অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় আমার মোবাইলে তাঁর ওয়াই-ফাই জুড়ে দিলেন ৷ তাই সুযোগ পেলাম কিছু লেখার ৷ শুভকামনা, বুকভরা শুভেচ্ছা জানাচ্ছি সবাইকে ৷ আমাকে শুভেচ্ছার বন্যায় ভাসিয়ে দেওয়ায় আমি চিরঋণী সবার কাছে ৷ ভালো থাকবেন সবাই ৷
                              নিত্য শুভেচ্ছাপ্রত্যাশী
                       অশোকানন্দ রায়বর্ধন, সাব্রুম,
                                    দক্ষিণ, ত্রিপুরা ৷

সংক্রান্তি

তোমার হাত কী মোহনীয় হয়ে উঠবে এই সংক্রান্তির সন্ধ্যায়
নিকোনো উঠোন আলপনায় রাঙানো হয়ে গেলে ক্লান্ত হাত
পড়শির পরশ চাইবে নিভৃতে অন্তত প্রশংসামুখর দুচোখ
যেমন মাহেন্দ্রসূর্য কুসুমশোভন হাসিতে স্বচ্ছ উঠোনে বুলোবে চোখ

পিটুলিগোলার রঙ ভেসে উঠতেই
তোমাকেও মনে হয় সেজে উঠেছ
মাঘসকালের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে
বুড়ির ঘরের সামনে যেন আগুন উত্তাপের একমাত্র পরিষেবাপুষ্ট
রক্তিম আঁচের আভায় একমাত্র তুমি যেন সুন্দরী হয়ে ওঠো কুয়াশাভোরে

পৌষের শেষ সকাল এভাবেই প্রাতঃভ্রমণ সারে তোমাকে নিয়ে ৷

গীতগোবিন্দম


বাইরের সংকেত জানানোর জন্যে দরোজায় রাখা কলিং বেল নিয়ম মেনেই কথা বলে যায় ৷ সারারাত ঘাসের ডগায় অপেক্ষা করে শিশির ভোরের সূর্যমুখের আশায় ৷ লাল আভায় নিজেকেও রাঙিয়ে নেওয়ার সুখস্নান ৷ নিকটকথা দিয়ে মুড়ে দেওয়া মনমতো জানালা পর্দাআঁটা সহবৎ শিখে নেয় ৷ অনবরত ডোরবেল বেজে গেলেও যদি দরোজার ওপার থেকে সাড়া না আসে তবে নিবেদনের জন্যে পদাবলি জেগে থাকবে কী সদরঘাটে?  রাধার নামে বাধারঘাটে যখন হুইসিল বাজিয়ে ছেড়ে যায় রাজধানীর ট্রেন আনন্দবিহারের উদ্দেশ্যে ৷ বিরহের মীড় যেখানে প্রবল গেঁথে যায় ধুলিজমিন ছুঁয়ে, ভেজা বালিতে কী লেখা যাবে পদপল্লবমের গোপন বাসনার কথা ৷ তাহলে তো আর একটা গীতগোবিন্দের জন্যে তুলট কাগজ কেঁদে যাবে ৷ তোমার তাতে কী সায় আছে রাই, সই?

Wednesday, January 16, 2019

বয়ন

গভীর রাতলিপি নিবিড় পাঠের পর
দরোজায় ঘন্টি বেজে যায় বিরতিবিহীন
রাতচরা সরীসৃপের অবোধ্য সংকেতের মাঝেহ
একটা সুতোবাঁধা  নির্দেশ গোপনে ছড়িয়ে যায়
ঘুমকাতর জনপদ ও জঞ্জালের অচেতন অবয়বে

আগামী রুটিন ঘুরে ফিরে আশা করে ভাবী বয়ন