পরিযায়ী বৈঠক
অশোকানন্দ রায়বর্ধন
পরিযায়ী বৈঠকের পাশে সারি সারি টংদোকান
আমাদেরও অনেকেই পরিযায়ী আড্ডায় আসেন
উত্তরে দামছড়া চুড়াইবাড়ি কাঞ্চনপুর কৈলাশহর
ধর্মনগর কমলপুর খোয়াই সদর উত্তর অঞ্চলের মানুষ
দক্ষিণে শান্তিরবাজার বাইখোরা নলুয়া, বিলোনিয়া,
জোলাইবাড়ি হরিনা ও সাব্রুম ছোটোখিল
কিংবা প্রাচীন রাঙ্গামাটি শহর উদয়পুর থেকে,
মাঝে মাঝে আসেন বাংলাদেশ ও
বহির্রাজ্যের মননের মানুষেরা
এই স্মার্ট সিটির অনেকেই আসেন প্রতি সন্ধ্যায়
বাইক স্কুটি কিংবা হেঁটে অনেকটা ট্রাফিক এড়িয়ে
বাহন নিয়ে এলে সুবিধা আছে তাতে হেলান
দেওয়া যায় ।
অন্যথায় চায়ের দোকানের রমণীর বরাদ্দ চারখানা আসন
মিউজিক্যাল চেয়ারের মতো ব্যবহার করতে হয় ।
সাহিত্য ও শাস্ত্রকথা থেকে শুরু করে দলীয় রাজনীতি
কোন দলে তারুণ্য আর কোথায় বরিষ্ঠ নাগরিকের মরুদ্যান,
মাঝে মাঝে কারো কারো ভেন্টিলেশনে যাবার খবর আসে
কোনো সন্ধ্যায় রবীন্দ্র পরিষদে গুচ্ছ স্মরণসভা হয় ।
তরুণদের কেউ কেউ মাঝে মাঝে চলে যায় লং ড্রাইভে
আবার ফিরেও আসে । বড়দের কেউ গেলে একদম ফেরারি ।
এর মাঝে কেউ কেউ পেশাগত কারণে দূর মফস্বলে যায় ।
এ রাজ্যে এটা দস্তুর যখন যেই আসুক শাসনের তখতে,
রাজনৈতিক সন্দেহ হলে ছাপোষা কর্মীর নির্বাসনে যেতে হয় ।
তাঁরা হাসতে হাসতে বেরিয়ে যান । ওষ্ঠে অঙ্গুরী ছোঁয়ান না ।
রাত বাড়লেই টঙের দিদিটা শেষবারের মতো নিয়ে আসেন
নানাবর্ণের চা আর তাড়া দেন আসনগুলো ফেরত পাবার জন্যে
কারণ তাঁকেও বাড়ি ফিরে যেতে হবে শহরতলির আঁধারে ।
তখনই প্রথম মুখ খোলেন দু-একজন পরিচিত কবি–
কাল বাংলাদেশ যাচ্ছি হে, কবিতা পড়ব জাতীয় কবিতা পরিষদে ।
ঠেকের অন্যরা হাঁ হয়ে থাকে । এতদিন তো শুনিনি এ কথা ।
আসলে উদার আকাশের নিচে এই কদমতলার ঠেক যদিও
চারদিকে ঝলমলে আলোয় রাতের আকাশকে যেমন
নকল দিন বানায় তেমনি ঠেকের মেধাবীরা সব
হাসির আড়ালে অনেক বার্তা চেপে যান ।
পরিযায়ী বৈঠকের অনেক সৃজন ও বার্তালাপ
মূলত শীতের পরিযায়ী পাখি ।
No comments:
Post a Comment