ত্রিপুরার সৃজনক্ষেত্রে আজ অস্থিরতা ৷ অবিশ্বাসের অশনিনির্ঘোষ ৷এই বিষবৃক্ষের বীজ অনেক আগেই পোঁতা হয়েছিল ৷ আজ সে গাছে ফল ধরেছে ৷ তার বিষক্রিয়ায় আজ আমরা সবাই লক্ষীন্দর ৷ ত্রিপুরা রাজ্যে আমরা যারা সুন্দরের আরাধনাকে জীবনের আর দশটা নিজস্ব কর্মের সঙ্গে জুড়ে নিয়েছি তারা কেউই ব্যক্তিগত লাভালাভের মোহে সেটা করছিনা ৷ কর্মক্ষেত্রে পরিচিতির পদমর্যাদার স্তরবিন্যাস থাকলেও সাহিত্য ও সংস্কৃতির অঙ্গনে সে ব্যবধান থাকেনা ৷ সেখানে সবাই একে অন্যের সতীর্থের মতো একাত্মতা অনুভব করি ৷ আমরা জানি আমাদের এই প্রান্তিক ভুবনের সৃজন বৃহত্তর বঙ্গসংস্কৃতির অঙ্গনে স্থায়ী দাগ রাখার মতো সৃষ্টি এখনও করে উঠতে পারিনি ৷ কিন্তু আমাদের সম্মিলিত প্রয়াস রয়েছে স্থান নেবার জন্যে ৷ সেকারণেই আমরা একে অন্যের সৃষ্টিকে তুলে ধরার প্রয়াসী হই ৷ এভাবেই ত্রিপুরার প্রত্যন্ত প্রান্ত থেকেও আজ উঠে এসেছেন সৃজনকর্মীরা ৷ সমৃদ্ধ হয়েছে আমাদের দীন আঙিনা ৷ কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কোনো উদ্যোগ নিলে শরিক হবার বা পাশে দাঁড়াবার সুযোগ নিই ৷ কিন্তু আমরা এও লক্ষ্য করেছি, কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কোনো উদ্যোগ নিলে অন্য আর একদল সেটাকে পাশ কেটে যান ৷ অনুষ্ঠানের ধারে কাছে থাকেননা কিন্তু বাইরে থেকে শলা নাড়েন ৷ উপযাচক হয়ে আগত অতিথিদের শুভাকাঙ্ক্ষী হয়ে ওঠেন ৷ উদ্যোক্তাদের নির্ধারিত পরিকল্পনায় ব্যাঘাত ঘটান ৷ বাংলাদেশ থেকে আগত অতিথি যেমন এখানে নৈশভোজের আসরে লাঞ্ছিত হয়েছেন তেমনি আমাদের রাজ্যের প্রিয় কবিদের বিরুদ্ধে ওদেশের কেউ সোস্যাল মিডিয়ায় বিশ্রী স্ট্যাটাস দেয় তখন এরাজ্যেরই কোনো সম্মানিত ব্যক্তিত্ব মুহূর্তে সেই স্ট্যাটাসকে ছড়িয়ে দিয়ে সেই নোংরামিকে উসকানি দেন ৷ আর নিজেদের মধ্যে ফেসবুকে ল্যাং মারামারি, কাউকে ছাগদুগ্ধ সেবনের পরামর্শ, কারো ব্যক্তিগত বিষয় উন্মোচন এসবতো আকছারই ঘটেছে ৷ যাঁর অনুষ্ঠান সম্পর্কে কোনো অতিথি ব্যক্তিত্ব ফিরে গিয়ে বিষোদ্গার করেন, তাঁর পাশে কেউ প্রতিবাদ করার পর দেখা যায় কোনো এক উজ্জ্বল ভোরে দেখা যায় সাপে নেউলে একসাথে সেলফিশোভন হাসি বিতরণ করেন ৷ এও এক আজব আচার ৷ ফারাকটা হলো একসময়ে অঘটনগুলোর কর্তারা স্বনামেই কাজগুলো করেছেন ৷ আর আর আজকে মুখটাকে 'চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা' করে পরিচিতিকে অর্ধনারীশ্বর করে বেদনাদায়ক ঘটনাগুলো করছেন ৷ এখানে আমি কারু সাহসের বা ভীরুতার তুলনা করছিনা ৷ পুরীষ উভয়েই ঘাঁটছেন ৷ কেউ কেউ কানকথায়ও প্রিয়জনকে ভুল বুঝছেন ৷ বেদনাহত হচ্ছি প্রিয়জনের লাঞ্ছনায়, মানসিক যন্ত্রণায় ৷
অবসান ঘটানো যায়না কী এই কন্টকাকীর্ণ পরিবেশের ৷ এই অবিশ্বাস ও দ্বন্দ্বের ৷ আসুন না, তরুণ কিংবা বরিষ্ঠজনেরা ৷ বসুন না সামনাসামনি ৷ রাগ অভিমান ঝেড়ে ফেলে এই কিরাতভূমির সৃজনকে সম্মিলিতভাবে তুলে ধরি বৃহতের আঙিনায় ৷ জীবনের যে সিঁড়িতে এসে পৌঁছেছি ৷ যে কোনদিনই পুষ্পস্তবক আমার জন্যে খুঁজে রাখতে হতে পারে ৷ আসুন না এই ভূমি আর তার প্রকৃতি ও মানুষকে ভালোবাসায় ভরিয়ে দিই ৷ সেই বিরাটপুরুষের জন্মদিনে এই বোধটাই ছড়িয়ে দিই সকল প্রাণে ৷
Wednesday, May 8, 2019
রাঙিয়ে দিয়ে যাও গো
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment