অবিরত এগোতে থাকলেও ফেরা অনিবার্য
ফিরতেইতো হয় সর্বস্ব অসম্মতির পরেও
ফিরি কোথায়? ঘরে না অচিন গুহায়!
দিগন্তে মিলিয়ে গেলেও প্রত্যাবর্তনই অভিধা
শূণ্যেই লুকানো থাকে সর্বশেষ গন্তব্য
Friday, May 19, 2017
ফেরা
সেলফি
তুুমি ছায়াচাহনি নিয়ে সেলফি তোল আড়ালচোখের
তোমার নয়নলিপি যদি পড়তে পারতাম আমি, হায়!
আমি ঝাঁপ দিতাম রোদচশমা ভেঙে ওই অশ্রুপুকুরে ৷
বর্ষাবাস
বর্ষাবাস
অশোকানন্দ রায়বর্ধন
কান্না কিংবা কীর্তন কী যে করো, বুঝি না বৃষ্টি
ভুমিতলে বিছিয়ে দিয়েছো আজব আরশি
চাঁদরঙা মুখ ধুয়ে কে এক অতৃপ্ত তরুণী
দেখ নেয় তার উপোশী সংকেত সেই মুকুরের স্বচ্ছতায়
জলের গমনধারায় চোখ রেখে রেখে সেখানেও
জলের গতি নামে ৷ আর ভেবে যায়
এই গতিময় জলের উজান বেয়ে তার
কাছে ছুটে আসবে উদ্দাম স্বীয়পুরুষ
যার কাছে সমর্পনে পর সেও বর্ষার রূপ নেবে
সন্তান
যে শহরের নিদ্রা নেই তার বুকে ঘুমিয়ে পড়া পাপ
হে কোজাগর নগরী , তোমার বুকে মিশে জেগে থাকি
দেখে যাই অপত্যের আয়ুর আখ্যানপরিধি
পুরাণের ঈশ্বরী পাটনি কিংবা ইতিহাসের বাবর
সকলেই সন্ততির সুখে ছেড়ে যায় অন্তিম অণু
হে প্রাণ ! এ শহরের মতো চিরজাগরুক রাখো সকল জীব ও জীবন ৷
শিক্ষক সমাচার
যথার্থ শিক্ষকের পাওয়ার কিছুই থাকে না যদি সমাজ না দেয় ৷ আর সমাজেরও এমন কোন জাবেদা খাতা নেই যেখানে যথার্থ শিক্ষকের প্রতিদিনের ক্ষরণ লিপিবদ্ধ থাকে ৷আজীবন দহনতৃপ্ত শিক্ষক দিনান্তে কিছুই চান না ৷ কামনাহীন প্রস্থানপ্রস্তুতি নেন ৷ আশা করেন শেষশিখায়ও যেন সন্ততিপ্রতিম শিক্ষার্থীর জন্যে উৎসর্গায়ন হয় ৷ আর শেষগমন হয় যেন আজন্ম শিক্ষার্থীর মতো স্বীয় শিক্ষকগণের পদাঙ্কধূলিতে সাষ্টাঙ্গ প্রণাম ও প্রাণায়ামের মুগ্ধমুদ্রায় ৷
Wednesday, May 10, 2017
অন্য অশোক
গত পরশুদিন সাব্রুম বইমেলায় আয়োজন করা হয়েছিল কবি সম্মেলনের ৷ অনুষ্ঠান শুরুর আগে কবিদের নিয়ে বসেছিলাম আমাদের প্রিয় দাদা অশোক বসাকের দোকানে ৷ ইংরেজীতে ভাষান্তর করে তাঁর দোকানের নামে একটা মুন্ডমাল শব্দ সবাই মজা করে ব্যবহার করে ৷ ABCD অর্থাৎ অশোক বসাকের চায়ের দোকান ৷ আবার তাঁর দোকানের ল্যান্ড ফোন নম্বরও মজাদার সংখ্যার ৷ আমার বড়ো ছেলে রুশো এবং তার কিছু বিটকেল বন্ধু মিলে স্কুলে পড়ার সময় আমাদের ল্যান্ড ফোন থেকে অশোক জ্যেঠুর চারশো বিশ নম্বরে ফোন করে তাঁকে জ্বালাত ৷ আমাদের অশোকদাও বিষয়টা স্পোর্টিংলিই নিতেন ৷ জেনেছিলাম এরকম অনেক দুষ্টু ছেলেই এই মজাটা নিত ৷ তাঁকে খেপাতে না পারায় একসময় তারা রণে ভঙ্গ দেয় ৷ যাই হোক এই ছোট্টো মহকুমা শহরের ধমনীতে এই দোকানটা অক্সিজেন জুগিয়ে চলেছে ৷ ABCDকে সাব্রুমের কফি হাউস বা মিনি প্রেসক্লাবও বলা যেতে পারে ৷ আমরা টুকটাক লেখালেখি করি, অনেকেই লেখার রসদ এখান থেকেই পেয়ে যাই ৷ আড্ডা দিতে বসে হঠাৎ একটা সংবাদের ক্লু পেয়ে কোনো তরুণ সাংবাদিক বাইক নিয়ে ধাঁই কিরি কিরি বেরিয়ে গেলেন সংবাদশিকারে ৷ তাছাড়া তাঁর দোকানের রসগোল্লা বিখ্যাত ৷ যাঁরা একবার এর স্বাদ একবার পেয়েছেন তাঁকে বার বার টানবে এই রসগোল্লা ৷ কোথায় লাগে বাগবাজার! বাইরে থেকে যাঁরা কার্যকারণে সাব্রুমে এসে এ দোকানের রসগোল্লার স্বাদ নিয়েছেন তিনিই এর প্রশংসায় পঞ্চমুখ ৷ অনেক বিখ্যাত লোক অশোকদার রসগোল্লার প্রেমে মজেছেন ৷ তার রেকর্ড অশোকদার কাছে আছে ৷ ঘন্টার পর ঘন্টা আড্ডায়ও অশোকদা বিরক্ত হন না ৷ সামনের বারান্দায় একটা টেবিল আর চারটে চেয়ার বরাদ্দ রয়েছে আড্ডারুদের জন্যে ৷ দোকানের সামনে কদিন আগেও মাঝারি সাইজের একটা আমগাছ ছিল ৷ জাতীয় সড়কের কলেবর বাড়ানোর প্রক্রিয়ায় গাছটা উন্নয়নের যূপকাষ্ঠে নিবেদিত হয়েছে ৷ ফলে বিকেলের দিকে দোকানটায় পশ্চিমের রোদের আক্রমণ ঘটে ৷ আড্ডাশিল্পীদের গায়ে যাতে রোদ না লাগে তার জন্যে ঢাউস এক সামিয়ানা কাম পর্দা তৈরি করেছেন ৷ বিকেলের দিকে সেটা ছাদের কোণ থেকে নিচের দিকে ঝুলিয়ে দেন ৷ বোঝা যায় তিনি অন্তর থেকে সংস্কৃতিকে লালন করেন ৷ শুনেছি ছাত্রাবস্থায় তিনি ছিলেন স্কুলের এন সি সির ডাকসাইটে ট্রুপ কমান্ডার ৷ তখন এ মহকুমায় একমাত্র হাইস্কুলটি ছিল সাব্রুমেই ৷ কাজেই সে সময়ে তরুণদের লিডার ছিলেন তিনিই ৷
যে কথাটা বলছিলাম ৷ এদিন বিকেলবেলা আকাশটা গোমড়ামুখো থাকায় অনুষ্ঠানটা শুরু হতে দেরি হচ্ছিল ৷ মেলার মাঠে খোলা আকাশের নিচে বসাও যাচ্ছিল না ৷ অন্য মহকুমার কবিরা এসেছেন ৷ কোথায় নিয়ে বসাই ৷ এতোজনকে নিয়ে দাদার দোকানে বেশিক্ষণ বসে থাকাও ঠিক হবে না ৷ তাঁর ব্যবসার ক্ষতি হবে ৷ আমাদের ফিসফিস আলোচনা হলেও তাঁর কানে গেল ৷ এগিয়ে এসে বললেন, ছাদে চলে যাও ৷ উঠতে একটু কষ্ট হবে ৷ বলে তিনি নিজেই সবাইকে ছাদে পৌঁছে দিয়ে বসার চেয়ার পেতে দিয়ে তবে নিচে নামলেন ৷ এই হলেন আমাদের অশোকদা ৷ তাঁর দোকানের ছাদে প্রথমবার উঠে সাব্রুম শহরের মেঘমাখা আকাশটা দেখে ভাবছিলাম ব্যবসায়ী দাদা অশোক বসাকের হৃদয়টাও কী এমনই আর্দ্র!
Tuesday, May 2, 2017
উত্তরপূর্বের বিশিষ্ট প্রকাশন সংস্থা ' স্রোত' আয়োজিত কথাসাহিত্য উৎসব - 2017
আগরতলা সংবাদ:২৮:০৪:২০১৭:
প্রথম বারের মতো স্রোত আয়োজিত উত্তর পূর্ব কথা সাহিত্যউৎসব:২০১৭ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবন আগরতলায় আগামী ১১জুন ২০১৭।তথ্য সংস্কৃতি দপ্তর,ত্রিপুরা সরকার , আসামের ঈশানের পুঞ্জমেঘ ব্লগ ও বাংলাদেশের চট্টগ্রামের অভ্যুদয় সংগীত অঙ্গন এবং বাচিক শিল্পী প্রবীর পালের সহযোগিতায় এই আয়োজনে বাংলাদেশের কথা সাহিত্যিক ড.সেলিনা হোসেন,মেঘালয়ের কথা সাহিত্যিক স্ট্রীমলেট ডখার,ফাল্গুনী চক্রবর্তী,আসামের তপন কুমার মোহন্ত , দেবীপ্রসাদ সিংহ, কান্তারভূষণ নন্দী, মেঘমালা দে এবং বাংলাদেশের আনোয়ারা সৈয়দ হক, জাহাঙ্গীর আলম,কবি আসলাম সানী,জয়দুল হোসেন,মনিরুল মনির সহ প্রায় ৪০জন কবি সাহিত্যিক সাংস্কৃতিক গুণীজন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বলে কথা দিয়েছেন।ত্রিপুরার কবি রামেশ্বর ভট্টাচার্য, প্রাবন্ধিক অশোকানন্দ রায়বর্ধন, কবি আকবর আহমেদ,কবি অপাংশু দেবনাথসহ কবি সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক গুণীজনদের সহযোগিতায় এই আয়োজনে ইতিমধ্যেই আগরতলায় বিপুল সাড়া পরিলক্ষিত হচ্ছে।
প্রায় তিরিশজনের প্রস্তুতি কমিটি সহ আলোচনা ক্রমে আগামী ১১জুন ২০১৭ রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত কথাসাহিত্য উৎসব উদযাপিত হবে বলে প্রাথমিক আলোচনায় তারিখ স্থির হয়।
সমগ্র অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করবেন বাচিক শিল্পী শাঁওলী রায়,সিদ্ধার্থ হালদার, সুমিতা ধর বসু ঠাকুর এবং অধ্যাপিকা মৌসুমি বাসফোর
আয়োজক স্রোতের পক্ষে কবি গোবিন্দ ধর একথা জানিয়ে সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।