দক্ষিণের সীমান্তনদী ফেনীকে বাঁচাতে হলে একেবারে উজানের দিক থেকেই পদক্ষেপ নিতে হবে । ফেনীর উৎস থেকে আমলিঘাট পর্যন্ত দুপারে দুদেশের সীমা নির্দেশ করে । এই অংশটাতে এখন নাব্যতাই নেই । অথচ একসময় শিলাছড়ি-ঘোড়াকাপা, অযোধ্যা-দেওয়ানবাজার, সাব্রুম-রামগড়, রানিগঞ্জবাজার-বাগানবাজার, আমলিঘাট ইত্যাদি দুপারের গঞ্জ ও ব্যবসাকেন্দ্রগুলোতে বড়ো বড়ো নৌকা ভিড়ত । কিন্তু এখন আর নদীতে বর্ষাকালেও তেমন জল থাকে না । নৌকা চলাচল তো দুরস্ত । উভয়তীরেরই পাহাড়ে যথেচ্ছ মাটি কেটে নেওয়া, বৃক্ষছেদন ও বনধ্বংসের ফলে পাহাড় জলধারণ ক্ষমতা হারাচ্ছে । বছরের বেশির ভাগ সময় নদীতে জল থাকে না । নদীর বুকে চড়া পড়ে গেছে । এই সমস্যা নিরসনের ক্ষেত্রে দূই রাষ্ট্রের তরফ থেকে যৌথভাবে কর্মসূচি নিতে হবে । মুহুরী প্রকল্পের ফলে ভাটির দিক উন্নত হয়েছে সত্য কিন্তু উজানের মানুষের কাছে ফেনী নদীর মাছ কিংবদন্তীর পর্যায়ে চলে গেছে । অথচ ফেনীনদী একসময় রুই, কাতলা, বোয়াল, কালিবাউস, বাইলা, চিড়িং, চেলস, কাঁডা ইচা, ইলিশ ইত্যাদি নানারকম মাছের অফুরন্ত ভান্ডার ছিল । হালদা নদীর মতো ফেনীনদীও ছিল নানা প্রজাতির মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র । আজ সব ধ্বংস হয়ে গেছে । এসব নিয়ে কেউ কথা বলে না। নদীর দুইতীরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও মনমুগ্ধকর । নাব্যতার উপযোগী করা গেলে এই নৌকাভ্রমণের মাধ্যমে পর্যটনশিল্পের প্রসার ঘটানো যেত । নৌপরিবহনের মাধ্যমে দুদেশের মধ্যে স্বল্পব্যয়ের বাণিজ্যসম্ভাবনাও সৃষ্টি করা যেত ।
No comments:
Post a Comment