Tuesday, May 9, 2023

রবীন্দ্রনাথের কৃষিভাবনা : প্রসঙ্গ ত্রিপুরা

রবীন্দ্রনাথের কৃষি ভাবনা : প্রসঙ্গ ত্রিপুরা

 কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ অসামান্য প্রতিভার অধিকারী । তিনি সাহিত্যকর্ম ছাড়াও শিক্ষা, পল্লী উন্নয়ন, আধুনিক কৃষি উন্নয়ন, কর্মশিক্ষা, সমবায় ভাবনা, ইত্যাদি বহুমুখী চিন্তা চেতনার ধারক । তাঁর নানা লেখালেখি এবং বিস্তৃত কর্মকাণ্ডে কৃষি উন্নয়ন ভাবনার বহু পরিচয় পাওয়া যায় । এদেশে আধুনিক কৃষিপ্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রথম পথপ্রদর্শক রবীন্দ্রনাথ ।  গ্রামীন কৃষির  আধুনিকীকরণের মাধ্যমে তিনি এদেশের দরিদ্র কৃষকদের অর্থনৈতিক মুক্তির পথ খুঁজেছিলেন । তিনি শ্রীনিকেতনে ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে আধুনিক ধরনের খামার গড়ে তোলার জন্য চাষিদের উদ্বুদ্ধ করে তুলেছিলেন । রবীন্দ্রনাথ ১৯৩০ সালে যখন রাশিয়া ভ্রমণে যান তখন তিনি সেখানকার কৃষকদের কর্মতৎপরতা আর দৃঢ় প্রত্যয়ী মানসিকতা দেখেন ও তার বিপরীতে এ দেশের কৃষকদের দুর্দশার কথা ভেবে তাঁর মন চঞ্চল হয়ে উঠেছিল । এদেশের চাষীদের দুর্দশা দেখে কবি বলেছেন, 'কেবল ভাবছি আমাদের এ দেশের চাষীদের আমাদের দেশ জোড়া চাষীদের দুঃখের কথা । আমার যৌবনের আরম্ভকাল থেকেই বাংলাদেশে পল্লীগ্রামের সঙ্গে আমার নিকট–পরিচয় হয়েছে । তখন চাষীদের সঙ্গে আমার প্রত্যহ ছিল দেখাশোনা–ওদের সব নালিশ উঠেছে আমার কানে ।' ( রাশিয়ার চিঠি, বিশ্বভারতী গ্রন্থালয়, কলিকাতা পৃ. ২০ )

বাংলাদেশের ঠাকুর পরিবারের তিনটি জমিদারি এস্টেট ছিল । এগুলো হলো বিরামপুর, শাহজাদপুর ও কালিগ্রাম । বিরামপুরের সদর দপ্তর ছিল কুষ্টিয়া জেলার শিলাইদহ । শাহজাদপুর এবং কালিগ্রামের সদর দপ্তর ছিল নওগাঁ জেলার পতিশর । ১৮৯০ সালে রবীন্দ্রনাথ পৈত্রিক সম্পত্তি দেখাশোনা করা এবং খাজনা আদায়ের জন্য বাংলাদেশের এ অঞ্চলে প্রথম আসেন । সেখানে তিনি দেখেছেন মহাজনের ঋণের জলে বাঁধা পড়া কৃষকদের দুঃসহ জীবন, তিনি দেখেছেন সেখানকার পতিত জমি, অনুর্বর জমি ও এক ফসলী জমিগুলো । এই কৃষকদের কথা ভেবে তিনি মনোযোগ দিয়েছিলেন বাংলার কৃষি উন্নয়নে । জমিদারদের কবল থেকে বাংলার কৃষকদের রক্ষা করার জন্য ১৮৯৪ সালে শিলাইদহে এবং ১৯০৫ সালে পতিসরে স্থাপন করেছিলেন কৃষি ব্যাংক । উন্নত জাতের বীজ সংগ্রহ করেছিলেন । ১৯০৬ সালে তিনি তাঁর পুত্র রথীন্দ্রনাথ এবং বন্ধুর ছেলে সন্তোষ মজুমদারকে ও ১৯০৭ সালে জামাতা নগেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায়কে ( কন্যা মীরার বর ) আমেরিকার ইলিয়নস বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়েছিলেন কৃষিতে উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য । কৃষির আধুনিকায়নের জন্য ট্রাক্টরের ব্যবস্থা করেছিলেন । জৈব সার ব্যবহারের প্রয়াস নিয়েছিলেন । জমির আইল ও পতিত জমি ব্যবহার করে কৃষির ফলন বাড়ানো, সেচ ব্যবস্থা ইত্যাদির উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি । কৃষি বিকাশে তাঁর অবদান সত্যি ইতিহাস হয়ে রয়েছে । আসলে এর মাধ্যমে রবীন্দ্রনাথের মানবতার আরেকটি উজ্জ্বল দিক উন্মোচিত হয়েছিল ।

১৮৮১ সালের ২৩ জুন প্রকাশিত রবীন্দ্রনাথের 'ভগ্নহৃদয়' কাব্যগ্রন্থকে কেন্দ্র করে রবীন্দ্রনাথ ত্রিপুরার রাজাদের সঙ্গে বিশেষ করে রাধাকিশোর মাণিক্যের সঙ্গে সখ্যতায় আবদ্ধ হয়ে দীর্ঘদিন নিবিড় যোগাযোগ রক্ষা করেছিলেন । ত্রিপুরা রাজ্যের পর পর চারজন রাজার সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের গভীর সম্পর্ক ছিল । মহারাজা বীরচন্দ্রের ( ১৮৬২— ১৮৯৬ ) পর ১৮৯৬ খ্রিস্টাব্দে ( ১৩০৩ বঙ্গাব্দ ) রাজা হন রাধাকিশোর মাণিক্য (১৮৯৬–১৯০৯ ) । বীরচন্দ্রের আমলের শেষদিকে ত্রিপুরা রাজ্যের সামগ্রিক অবস্থার ভীষণ অবনতি ঘটেছিল । বিপুল আর্থিক ঋণের ভার মাথায় নিয়ে রাধাকিশোর মাণিক্য সিংহাসনে আরোহন করেন । তাঁর রাজ্যভার গ্রহণের আগে থেকেই রাজপরিবারের মধ্যে অন্তর্কলহ সৃষ্টি হয় । রাজপরিবারের একটা গোষ্ঠী কৌশলে অনেক মূল্যবান কাগজপত্র সরিয়ে ফেলেন । সিংহাসনের দাবি নিয়ে রাধাকিশোর মাণিক্যের বিরোধী একটা অংশ ইংরেজ সরকারের আদালতে মামলা করেন । রাধাকিশোর সিংহাসনে বসার পর তার পুত্র বীরেন্দ্রকিশোরকে যুবরাজ বলে ঘোষণা করায় বড়ঠাকুর সমরেন্দ্রচন্দ্র ইংরেজদের আদালতে মামলা করেন । অন্যদিকে ১৮৯৭ সালের এক বিধ্বংসী ভূমিকম্পে ত্রিপুরার রাজবাড়ি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে । একদিকে আর্থিক সংকট, প্রাসাদের অভ্যন্তরে ষড়যন্ত্র, সবমিলিয়ে রাধাকিশোর ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়লেও ধৈর্যচ্যুত হননি । সর্বোপরি রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ থাকায় ইংরেজ সরকার বিষয়টি ভালোভাবে নেয়নি ।রাধাকিশোর এই সময় রবীন্দ্রনাথের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে সমস্ত বিপদ কাটিয়ে উঠতে পেরেছিলেন । ১৮৯৭ সাল থেকে শুরু করে ১৯০৯ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ সময়ে সমস্যাদীর্ণ  ত্রিপুরাকে রবীন্দ্রনাথ বারবার সাহায্য করে গেছেন । রাজ্যের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে পরামর্শদানকে রাজ পারিষদের অনেকে সুনজরে নেননি । তারা মনে করতেন, ত্রিপুরার রাজকার্যে রবীন্দ্রনাথ অনধিকার হস্তক্ষেপ করছেন । কিন্তু কবি প্রতিনিয়ত ত্রিপুরার মঙ্গলচিন্তা করতেন । মহারাজা রাধাকিশোর মাণিক্য সব সমালোচনা উপেক্ষা করে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রবীন্দ্রনাথের পরামর্শ গ্রহণ করতেন । রবীন্দ্রনাথ ও নানা বিষয়ে মহারাজকে পরামর্শ দিয়ে গেছেন । রাজার ঋণ গ্রহণ, বাজেট নোট তৈরি, রাজকুমারদের শিক্ষা, রাজ্য পরিচালনা ইত্যাদি নানা বিষয় কবি রাজাকে পরামর্শ দিয়ে গেছেন ।

১৩০৬ বঙ্গাব্দের চৈত্র মাসের অর্থাৎ ১৮৯৯ সালের মার্চ মাসের ২৭ তারিখ দোল পূর্ণিমার দিন মহারাজা রাধা কিশোর মাণিক্যের আমন্ত্রণে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রথমবার ত্রিপুরায় আসেন । সে সময় তিনি সপরিবারে শিলাইদহে ছিলেন । লেখালেখি এবং চাষাবাদ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাঁর দিন অতিবাহিত হচ্ছিল । অল্প কিছুদিন আগে তাঁর ভ্রাতুষ্পুত্র বলেন্দ্রনাথ ঠাকুরের অকাল মৃত্যুতে কবি গভীর শোকগ্রস্ত হয়ে পড়েন । এছাড়া কুষ্টিয়ায় ঠাকুর কোম্পানির ক্ষতি, কবির ঋণগ্রস্থ হওয়া, আর্থিক সংকট, পারিবারিক রোগ-ব্যাধি ইত্যাদি নানা বিষয়ে তাঁর মন ভারাক্রান্ত থাকায় বন্ধু রাধাকিশোর তাঁর মানসিক অবস্থার পরিবর্তনের জন্য ত্রিপুরায় আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন । রবীন্দ্রনাথও সেই আমন্ত্রণ গ্রহণ করে ত্রিপুরায় এসেছিলেন । রবীন্দ্রনাথ সব মিলিয়ে সাতবার আগরতলা পরিভ্রমণে এসেছিলেন । এর মধ্যে মহারাজা রাধাকিশোর মাণিক্যের আমলে মোট পাঁচবার এসেছিলেন । ১৩২৬ বঙ্গাব্দের কার্তিক মাসে ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দ মহারাজা বীরেন্দ্রকিশোর মাণিক্যের বিশেষ আমন্ত্রণে শিলং থেকে রবীন্দ্রনাথ ষষ্ঠবার আগরতলায় বেড়াতে এসেছিলেন । এরপর ১৩৩২ বঙ্গাব্দে ফাল্গুন মাসের ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দ ১০ থেকে ১৪ তারিখ মহারাজ কুমার ব্রজেন্দ্রকিশোরের আমন্ত্রণে সপ্তমবার তথা শেষবার আগরতলায় এসেছিলেন ।

শিলাইদহে অবস্থানকালীন সময় রবীন্দ্রনাথ বাংলার কৃষির আধুনিকায়নের যে পদক্ষেপ নিয়েছিলেন সেই কৃষিভাবনা তিনি পরবর্তী সময়েও অন্তরে বহন করে  বেড়িয়েছিলেন । গঠনমূলক ও স্বাবলম্বী সমাজ গঠনের ভাবনাতেও তাঁর স্বকীয়তার ভাব স্পষ্ট ছিল । রবীন্দ্রনাথের কৃষিভাবনার মধ্যে কৃষিতে মাটির গুরুত্ব, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির ব্যবহার, পতিত ও অনুর্বর জমিকে কাজে লাগানো, কৃষিতে সমবায় ভাবনা, জমিতে চাষির স্বত্ব এবং কৃষকদের জীবন যাপনের মানোনোন্নয়নের গুরুত্ব উপলব্ধি করে শান্তিনিকেতন ও শ্রীনিকেতনে দুটি মেলার আয়োজন করেছিলেন । হলকর্ষণ, বৃক্ষরোপণ, নবান্ন প্রভৃতির মত উৎসবের সূচনা তাঁর কৃষিভাবনা ও গ্রামীণ অর্থনীতির সামগ্রিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে তাঁর স্বকীয়তার পরিচয়কেই বহন করে ।

রবীন্দ্রনাথ শেষবার তথা সপ্তমবার যখন আগরতলায় আসেন তখন তাঁকে দেখভালের দায়িত্ব অর্পিত হয়েছিল রাজপারিষদ হরিদাস ভট্টাচার্যের উপর । হরিদাস ভট্টাচার্য মহাশয় রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে তাঁর সান্নিধ্যের এই কয়টি দিনের অভিজ্ঞতা দিনলিপির আকারে লিখে রেখেছিলেন । তিনি লিখেছিলেন, '১০ই ফাল্গুন রাত্রি প্রায় দশ ঘটিকার সময় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ কুঞ্জবন প্রাসাদে পদার্পণ করেন ।' তারপরের দিনগুলোর বর্ণনা থেকে জানা যায় যে, রবীন্দ্রনাথ ত্রিপুরাভূমিতে পদার্পণ করার পাশাপাশি  এখানকার কৃষি উন্নয়নের বিষয়টি তাঁর ভাবনায় রেখেছিলেন । হরিদাস ভট্টাচার্য তাঁর 'আগরতলায় রবীন্দ্রনাথ' প্রবন্ধে ১১ই ফাল্গুন তারিখে লেখেন—

"................ তারপর কবি পূর্ববঙ্গে পরিভ্রমণ সম্বন্ধে আলোচনা উপস্থিত হইলে বলিলেন 'তোদের দেশটা ( পূর্ববঙ্গ)  কর্মীর দেশ— কলেজের নিষ্ফল উচ্চশিক্ষার তোদের  কোন দরকার নেই— তোরা কিছু লেখাপড়া শিখে জমি সংগ্রহ করে রীতিমতো চাষ আরম্ভ করে দে ।' আজ এই বাণী বিশেষ অনুধাবনযোগ্য । এমনকি মহারাজ কুমার ব্রজেন্দ্রকিশোরকেও এইমত কাজকর্ম ছেড়ে ছুড়ে দিয়ে তার সাব্রুম তালুকে বসে বিস্তৃতভাবে বৈজ্ঞানিক প্রণালী অবলম্বনে agriculture করবার পরামর্শ দেন । ( আগরতলায় রবীন্দ্রনাথ, হরিদাস ভট্টাচার্য, রবীন্দ্রনাথ ও ত্রিপুরা,পৃ. ২৮৮ )

তাঁর ১৩ ফাল্গুনের দিনলিপিতে হরিদাস ভট্টাচার্য মহোদয় উল্লেখ করেন—

"সেদিন বিকালে কবি প্রতাপগড় কৃষি ক্ষেত্র ( দি টিপারা হিল ডেভেলপমেন্ট এন্ড কোম্পানি লিমিটেডের বাগান )  দেখিতে যান । সেখানে তাঁহার ও সমবেত ভদ্রমণ্ডলীর জন্য সামান্য জলযোগের ব্যবস্থা ছিল । বাগানটি দেখিয়া তিনি বড়ই আনন্দিত হন । চাষ-আবাদ সম্বন্ধে তিনি নিজে বড়ই উৎসাহী । জমিতে রস সংরক্ষণ সম্বন্ধে তিনি নিজে যে experiment করিয়াছেন তাহা ভদ্রচাষীর পক্ষে বিশেষ উপকারে আসিবে । জমিতে একহাত পরিমাণ গর্ত্ত করিয়া জমির সমুদয় মাটি একস্থানে জমা করিয়া রাখিয়া সমস্ত জমিটাকে খুব দুরমুস করিয়া দিতে হইবে । তারপর জমা করা মাটি সারের সহিত মিশ্রিত করিয়া জমিতে ছড়াইয়া দিবে । ইহাতে শীত বা গ্রীষ্ম কোন ঋতুতেই জমিতে রসের অভাব হইবে না । প্রত্যেক বর্ষার পর মাটি আলগা করিয়া দিতে হইবে ।( আগরতলায় রবীন্দ্রনাথ, হরিদাস ভট্টাচার্য, রবীন্দ্রনাথ ও ত্রিপুরা,পৃ. ২৮৮ )

রবীন্দ্রনাথের কৃষি ভাবনায় অনুপ্রাণিত হয়ে ত্রিপুরার মহারাজারাও নানাবিধ কৃষি বিষয়ে মনোযোগী হয়েছিলেন । মহারাজা রাধাকিশোর মাণিক্য রাজ্যের কৃষি ও শিল্প বিভাগ গঠন করেছিলেন । ১৩১৪ ত্রিপুরাতে বসন্ত উৎসবে রাজধানীতে শিল্প ও কৃষি প্রদর্শনীর মেলা হয়েছিল । বীরেন্দ্রকিশোরের আমলেই ত্রিপুরাতে চা বাগান গড়ে উঠেছিল । ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে চা বাগানের সংখ্যা ৪০ শে পৌঁছায় এবং চা কৃষিতে বিভিন্ন কোম্পানি কর্তৃক প্রায় এক কোটি টাকা লগ্নী করা হয়েছিল বলে জানা যায় । তার আমলেই রেশম শিল্পের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল । মূলত রবীন্দ্রনাথ ত্রিপুরার উর্বর এবং পতিত টিলাভূমিকে আবাদযোগ্য করার জন্য চা বাগান শিল্পের পক্ষে রাজাদের উৎসাহিত করেছিলেন । বীরবিক্রমের আমলে চা বাগানের সংখ্যা বাড়তে থাকে । ১৯৬৪ সালে ত্রিপুরা রাজ্যে চা বাগানের মোট সংখ্যা দাঁড়ায় ৫৬ তে । চা উৎপাদনকারী রাজ্যসমূহের মধ্যে ত্রিপুরা পঞ্চম স্থানের অধিকারী হয় । ( আধুনিক ত্রিপুরা : প্রসঙ্গ বীরবিক্রম কিশোর মাণিক্য, ড. দ্বিজেন্দ্র নারায়ণ গোস্বামী, পৃ. ৭০ )

 বিশ্বযুদ্ধকালীন সময়ে খাদ্যাভাব দূর করার জন্য রাজ্যের খাদ্যশস্য উৎপাদন বাড়ানোর উদ্দেশ্যে বাড়ি বাড়ি চাষ-আবাদ করার জন্য বীরবিক্রম উদ্যোগ নিয়েছিলেন । এতে রাজার আহবানে সাড়া দিয়ে নাগরিকবৃন্দ 'কিচেন গার্ডেন' শুরু করেছিল এবং অফিসের সামনে খালি জমিতে খাদ্য শস্য চাষ শুরু করে ।

রবীন্দ্রনাথের প্রত্যক্ষ উদ্যোগে গৃহীত কৃষি উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড গুলি শিলাইদহে ব্যর্থ হলেও তাঁর ভাবনা কিন্তু সেদিনের ছোট্ট রাজ্য ত্রিপুরায়ও সঞ্চারিত হয়েছিল । রাধাকিশোর মাণিক্য থেকে শুরু করে বীরেন্দ্রকিশোর এবং বীরবিক্রম কিশোর মাণিক্যের কৃষি উন্নয়নমূলক পদক্ষেপসমূহ তারই সাক্ষ্য বহন করে ।









সহায়ক গ্রন্থ :
১. রবীন্দ্রনাথ ও ত্রিপুরা– রবীন্দ্র শতবার্ষিকী স্মারক গ্রন্থ, ত্রিপুরা সরকার

২. মাণিক্য শাসনাধীন ত্রিপুরার ইতিহাস– ডক্টর নলিনীরঞ্জন রায়চৌধুরী

 ৩. তথ্যপঞ্জি– শ্রী দ্বিজেন্দ্র দত্ত, রবীন্দ্রনাথ ও ত্রিপুরা 

৪. নতুন হাভেলির ছয় মানিক্য– পান্নালাল রায়, পৌলমী প্রকাশন, আগরতলা 

৫. আগরতলায় রবীন্দ্রনাথ– হরিদাস ভট্টাচার্য, রবীন্দ্রনাথ ও ত্রিপুরা 

৬. আধুনিক ত্রিপুরা : প্রসঙ্গ
 বীরবিক্রমকিশোর মাণিক্য– ড. দ্বিজেন্দ্র নারায়ণ গোস্বামী, অক্ষর পাবলিকেশন, আগরতলা

৭. রাশিয়ার চিঠি– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিশ্বভারতী প্রকাশন, কলিকাতা 

৮. অন্য রবীন্দ্রনাথ– দেবব্রত দেবরায়, স্রোত প্রকাশন, কুমারঘাট, ত্রিপুরা ।

No comments:

Post a Comment