ভ্যালেন্টাইন ডে
অশোকানন্দ রায়বর্ধন
রোজ বাগানে গিয়ে টুকিটাকি কাজ করা অলক্তর অভ্যেস । টবে বসানো নতুন গোলাপ গাছটায় কিছুতেই ফুল টিঁকছেনা । কলি আছে অনেকগুলো । কেনার সময় নার্সারির ছেলেটা বলেছিল, একদম টকটকে লাল ফুল হবে স্যর । আর বড়োও যথেষ্ট । অলক্ত ফুটন্ত ফুলওয়ালা গোলাপচারাই কেনে । নিশ্চিন্ত হওয়ার জন্য । নার্সারির সবাই দীর্ঘদিনের পরিচিত । বিশ্বাস করে ঠকল নাতো ! বউ সিঁথিও বলেছে, দেখো, ঠিক ঠকিয়েছে ওরা তোমাকে । জংলি গাছ গছিয়ে দিয়েছ । জংলি হলেও তো ফুল ফোটার কথা । অলক্ত আত্মপক্ষ সমর্থনের চেষ্টা করে ।
সিঁথি...সিঁথি.... দেখে যাও । দেখে যাও ।
কি শুরূ করলে সকালবেলা !
আরে এসোনা । দেখে যাওনা ।
রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে আসে সিঁথি । চেঁচিয়ে বাড়ি মাথায় করছো যে !
দেখোনা , গোলাপ গাছটায় ফুল ফুটেছে একটা ।
তাই নাকি? দেখি , দেখি ।
সিঁথি কাছে গিয়ে অবাক চোখে ফুলটা দেখে । একদম টকটকে লাল, গোলাপটা ।
অলক্ত টুপ করলে ছিঁড়ে নেয় গোলাপটা ।
আহ্হা ! ছিঁড়লে কেন ফুলটা ?
অলক্ত ফুলটা নিয়ে সিঁথির সামনে গিয়ে দাঁড়ায় । আজ অনেকদিন বাদে ফুলটা ফুটেছে গাছটায় । এটা তোমার খোঁপাতেই মানাবে তাই ।
ছাই মানাবে । সিঁথি বলে ওঠে ।
আর আজতো ভ্যালেন্টাইন ডে । অলক্ত মনে করিয়ে দেয় । তাই ফুটেছে বোধহয় ।
আর বুড়ো বয়সে আদিখ্যেতা করতে হবেনা । সিঁথি বলল । অথচ শরীরটা ঝাঁকি দিয়ে পেছন ফিরেই দাঁড়াল ।
একটা মৌমাছি গুণগুণ করে উড়ে এসে বসল ফুলটার ওপর ।
No comments:
Post a Comment