গাধাতত্ত্ব
অশোকানন্দ রায় বর্ধন
গাধাকে মানুষ করা যায় কিনা জানিনা ৷ কিংবা ঘোড়াকে ৷ আমার বাবা প্রায়শই আমাকে মানুষ করার অনন্ত প্রচেষ্টা নিতেন ৷ আর আমাকে ভূষিত করতেন গর্দভ নামে ৷ গাধাকে মানুষ করার জন্যে তাঁর প্রতিদিন কঞ্চিকসরৎ চলত আমার পিঠের উপর ৷ মানুষ না হই নিদেনপক্ষে ঘোড়া করার জন্যে বেত মেরে ব্যতিব্যস্ত করতেন ৷ তাতে গাধাভূষণ আমি আজও মানুষ হতে পারিনি ৷ উপরন্তু প্রতীকী ঘোড়াটাও পিটুনি খেতে খেতে গাধাই হয়ে গেছে ৷
কোনো এক
অশোকানন্দ রায়বর্ধন
কোনো এক সময়ে কোনো এক সমাজের মানুষ কোনো একজন মহাপুরুষের পূর্ণাবয়ব মূর্তি কোনো এক মোড়ের মাথায় বসিয়ে কোনো এক বিশেষ দিনে জন্মতিথি আর কোনো এক বিশেষ দিনে মৃত্যুদিন পালন করতে করতে ভুলেই যায় মহাপুরুষটি কে ছিল ৷
তারপর কোনো একদিন সেই মানুষটির পায়ের তলায় পলিথিন ঘেরা সংসার পাতে কোনো এক শহুরে রিক্সাওয়ালা আর তার রাতের রোজগেরে বউ আর অজানাঔরসজাত বালবাচ্চা ৷ অবশেষে কোনো একদিন একদল বিজয়ী মানুষের হল্লামিছিল সেই মহাপুরুষকে বিদেশী বলে চিহ্নিত করে বুলডজার দিয়ে ভেঙে ফেলে সে মূর্তি ৷ আর বেওয়ারিশ সংসারটাকে নাগরিকত্বহীন ঘুসপেটিয়া বলে বেঁধে নিয়ে যায় ৷
তারপর স্বচ্ছতার অভিযাত্রীরা এসে ছেঁড়া পলিথিন সরিয়ে সেখান দিয়ে উন্নয়নের মহাসড়কের জন্যে জমি মাপে ৷
No comments:
Post a Comment