Tuesday, May 29, 2018

চ ক্ষে আ মা র তৃ ষ্ণা

মানুষ তার জাত্যাভিমানটাকে সরিয়ে ফেলতে পারলে তার হৃদয় প্রসারিত হয় ৷ ভাষা কোন বিষয়ই নয় ৷ অন্তরের ভাষা সবারই  এক ৷ এন আর সি কী করতে পারে ৷ কোনো ভাঙন ধরাতে পারে  অন্তরমহলে?  না পারে না?  এমনটাই মনে হয়েছে আমাদের এ যাত্রায় ৷ মানুষ ৷ মানুষই আমার সন্ধান ৷ মানুষের ভেতরের মানুষটাকে কোনদিনই খুঁজে পেলামনা ৷ খুঁজি সেই মানুষকে ৷ যে দূর করে দিতে পারে মনুষ্যনির্মিত ব্যবধান ৷ 'সেই মানুষে খুঁজে বেড়াই দেশ বিদেশে' ৷ দেখাও হয়ে যায় পথে পথে ৷
উত্তরবঙ্গের ইসলামপুর সন্নিহিত আলুয়াবাড়ি রোড থেকে ফেরার যাত্রা শুরুর কথা আটাশ তারিখ বিকেল চারটে কুড়িতে ৷ স্টেশনে এসে প্রথমেই শুনলাম অবধ-অসম এক্সপ্রেস দশ ঘন্টা লেট ৷ আমি অসুস্থ হয়ে পড়েছি ভীষণ ৷ আমাকে নিয়ে গোবিন্দ, গোপাল দৌড়াল নার্সিং হোমে ৷ সেখানে চিকিৎসায় পেলাম এক মহামানবিকতার পরিচয় ৷ সেটা অল্পকথায় বলার নয় ৷ তাই  আমার হৃদয়নিসৃত সেই অনুভব যত্নসহযোগে তুলে ধরার আশায় এখন আর অবতারণা করছিনা ৷
  সময় যতো এগুচ্ছে ট্রেনের বিলম্বের ততো বাড়ছে ৷ শেষ পর্যন্ত ঊনত্রিশ তারিখ সকাল দশটায় যখন ট্রেনের নাগাল পেলাম তখন সে উনিশ ঘন্টা পিছিয়ে চলছে ৷ আমরা পরবর্তী ট্রেনের সংযোগ পাব কী পাবনা দুশ্চিন্তার মধ্যে ট্রেনে চাপলাম ৷ দুপুরের মধ্যে এন জে পি পৌঁছুলাম ৷ খাওয়া দাওয়ার পর  গোবিন্দ বাঙ্কের উপর শয়ান হল ৷ আমি,গোপাল, সঞ্জীব, অভিক নিচে ৷ এক অসমিয়া তরুণী আমাদের কামরায় এলেন ৷ যেহেতু আমরা চারজন নিচে ৷ ফাঁকা আসন দেখে অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে আমাকে  বললেন,  ইয়াত বহি পারিম?  বললাম, বহক ৷ গোপাল সরে এসে আমার পাশে বসলেন ৷ মহিলাকে প্যাসেজের পাশে জায়গা ছেড়ে দিলেন ৷ কথায় কথায় জানা গেল তিনি দ্বাদশ স্তরের ভূগোলের শিক্ষিকা ৷ দু হাজার চৌদ্দতে টেট দিয়ে চাকরি পেয়েছেন ৷সপ্তম পে কমিশন বিন্যস্ত বেতন পাচ্ছেন ৷ নাম মইনু গগৈ ৷ বঙ্গাইগাঁওতে পোস্টেড ৷ তাঁর স্বামীও শিক্ষকতা করেন ৷  রঙ্গিয়াতে আছেন ৷ সেখানে যাচ্ছেন ৷ সাহিত্য ভালোবাসেন ৷ কথাবার্তার মধ্যে জানলাম আমাদের ত্রিপুরার অনেক খবর রাখেন ৷আমরা সপ্তম বঞ্চিত ৷ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী , বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী  উভয়ের সম্বন্ধেই ভালো খোঁজ খবর রাখেন ৷ অসমের সমকাল, সংকট, সমাজ সব নিয়ে স্পষ্ট ধারণা রয়েছে ৷ অসমের বিভিন্ন অঞ্চলের ভাষিক পরিবর্তন সম্বন্ধে আলোকপাত করলেন ৷ যতক্ষণ ছিলেন কবিতা শুনলেন আমাদের ৷ বাংলাকবিতা হলেও তিনি শুনছেন ৷ আমার সঙ্গীরা বাংলায় কথা বলছেন ৷ তিনি অসমিয়া ও হিন্দিতে বলছেন ৷ আমার সঙ্গে অসমিয়াতে ৷ একবারের জন্যেও আমাদের মনে হয়নি আমরা ভিন ভাষাভাষী মানুষ কথা বলছি এতোক্ষণ ৷ আমাদের কারো কথা বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে ৷ একটা আন্তরিক ঘরোয়া পরিবেশে যেন প্রতিবেশীর সুখদুখের কথা বলছি আমরা ৷
রঙ্গিয়া স্টেশনে ট্রেন ঢোকার পর তরুণী উঠলেন ৷ বললেন, ময় যাম এতিয়া ৷ ভাল লাগিল আপুনালোকর লগতে ই হময়টো ৷ আমার সঙ্গীরা বিদায় জানালেন ৷ তরুণী আমাকে বললেন,  আহক স্যর ৷ আমিও বললাম, কেনেকা সময়টো শেষ হল ৷
তরুণী মইনু গগৈ ট্রেন নেমে ছুটলেন তাঁর প্রিয়পুরুষের সান্নিধ্য লাভের তৃষ্ণায় ৷ সে প্রিয়জনটির নাম জানা হয়নি আমার ৷ ট্রেন ছেড়ে দিয়েছে ৷ আমি চেয়ে আছি সেই তরুণীর গমনপথের দিকে ৷ যে কিছুক্ষণের জন্যে একটা আত্মীয়তার বাতাবরণ তৈরি করে গেল ৷যার খোঁজে থাকি আমরা ৷ যার তৃষ্ণায় আমাদের যাপন ৷

Monday, May 21, 2018

ব্র হ্ম পু ত্র

ব্র  হ্ম  পু  ত্র

এই যুবক ট্রেনে আমাদের সহযাত্রী ৷ হিন্দিভাষী ৷নাম বললেন জে কে আনন্দ ৷ জীতেন্দ্রকুমার আনন্দ  নিরামিষাসী ৷ বিহারে বাড়ি ৷ নানা জায়গায় ধর্মীয় সঙ্গীত কীর্তনাদি পরিবেশন করে জীবিকা নির্বাহ করেন ৷ উনি তাঁর দল নিয়ে ডিমাপুর থেকে ফিরছেন ৷ আমরা উঠেছি একই কামরায় লামডিং থেকে ৷ গাড়িতে সারাদিন কথাবার্তার মধ্যে একটা অন্তরঙ্গতা তৈরি হয়েছে ৷ পথের খাবার আমার সহ্য হয়না ৷ তাই খাওয়া দাওয়ায় সাবধানে আছি ৷ উনারাও কিছু খাচ্ছেননা নিরামিষাশী হওয়ায় ৷ শেষ বিকেলে আমি একবাটি টক দই ও রুটি নিলাম ৷ এই আইডিয়াটা যুবকের ভালো লাগল ৷ তিনি ও তাঁর বন্ধুরা একবাটি করে খাট্টা দই ও রুটি নিয়ে খেলেন ৷ আমি আমার বোতল থেকে জল খেয়ে বোতলটা ফেলে দিলাম ৷ ওঁরাও জলটল খেয়ে আবার গল্প জুড়লেন ৷ সন্ধ্যার প্রাক মুহূর্তে এক মহিলা হন্তদন্ত হয়ে আমাদের কামরায় এসে বলছেন, ভাইয়া পিনেকা পানি হ্যায়?  পিনেকা পানি?   আমি তো চেয়ে রয়েছি নিম্নবিত্তের এই মুসলিম মহিলার দিকে ৷ কী করব আমি ৷ আমার কাছে তো আর জল নেই ওকে দেবার মতো ৷ আমার উল্টোদিকে বসা সেই যুবক মুহূর্তে তার জলের বোতল থেকে বেশ খানিকটা জল তাকে দিয়ে দিল ৷ মহিলা চলে যাওয়ার পর আমি যুবককে বললাম, ভাইয়া তুমনে বহুত বড়া কাম কিয়া ৷ হামারা শাস্ত্রবিধি মে কহতা হ্যায় জলদান মহাপুণ্য ৷ তুম নে ওহি কিয়া আজ ৷ সন্ধ্যা হয়ে গেছে ৷ আলিপুর দুয়ার পেরিয়ে যাচ্ছে ট্রেন ৷ বাইরে মাঝে মাঝে ধাবমান ট্রেনের সিটি, জনপদ থেকে ভেসে আসা সন্ধ্যার উলুধ্বনি আর আজানের আহ্বান মিলে এক অপূর্ব সিম্ফনি আমার মনের আলিবাঁধা দুয়ারটা পুরো যেন খুলে দিল ৷ এই ধর্মপ্রাণ হিন্দু যুবক এই কিংকর্তব্যবিমূঢ় মহিলাকে যেভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন তা ভারতের সম্প্রীতির চিত্রটাকেই যেন এই সন্ধ্যায় দেখতে পেলাম ৷ আমার এবারের পরিব্রাজনে এটা পরম প্রাপ্তি ৷ ব্রহ্মপুত্র মেলের আরোহী এই যুবকই আজকের ব্রহ্মপুত্র ৷

21 May, 2018

অপেক্ষা

শুধু কী ছুটির ঘন্টার অপেক্ষায় পার করে দেব দিনমান ৷
শুধু কী রুমাল ওড়ানোর জন্যে অতিক্রম করবো জীবন৷
শুধু কী সূর্যাস্তের ডিমরঙ ছড়িয়ে পড়বে বলে জীবন
শুধু কী সন্ধ্যের দিকে তাকিয়ে জ্বেলে যাবো সাঁঝবাতি৷

অথবা অপেক্ষায় থাকবো অক্লান্ত কখন তোমার নুপূর ইমনের গানে তাল মিলিয়ে উঠে আসবে কালো বনভূমি ঠেলে
যেমন স্নান সেরে ওঠা স্পষ্ট শরীর সুগন্ধী সাবানের ঘ্রাণ ছড়াতে ছড়াতে মুখোমুখি দাঁড়ায় অনেককালের চেনা তরুণী
লাজ ভেঙে যার সৃজনের সাধ জেগে ওঠে ৷

তুমি মহারাজ সাধু হলে আজ

ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হল সাব্রুমের দ্বিতল কংগ্রেস ভবন ৷ খাস জমি থেকে দলীয় অফিস তুলে দেওয়ার সরকারি নির্দেশ অনুসারে ৷ মানলাম খাস জমি উদ্ধার হল ৷ এই জমিতে হয়ত জনকল্যাণমুখী কোন পরিকল্পনা রূপায়িত হবে ৷ কিন্তু কথাটা হল এই যে দলীয় অফিসগুলো ভাঙা হচ্ছে একের পর এক ৷ পরোক্ষভাবে এগুলো কিন্তু জনগণের টাকায় তৈরি ৷ সে সরকারী দল হোক কিংবা বিরোধী দলের ৷ আর জনগণই বিভিন্ন দলের সদস্য ৷ রাজনৈতিক কাজকর্মে অংশগ্রহণের জন্যে জনগণকে অধিকার সংবিধানই দিয়েছে ৷ আর আমার ধ্যানের ভারতের জনগণের বৃহত্তর অংশই দরিদ্র ৷ যারা নিজের বাস্তুভিটের উপর যে চালাঘরটি তোলেন তার তার শতচ্ছিন্ন অবস্থা থাকলেও দলীয় অফিসটাকে একটু সুন্দর করে গড়ে তুলতে চায় ৷ সে যে দলই হোক ৷ সরকারী খাসজমিতে হওয়ার ফলে এই দরিদ্র মানুষগুলোর জমি কেনার টাকাটা বেঁচে যায় ৷ জনকল্যাণকামী সরকার সরকারী নিয়ম মেনে সরকারী খাস জমিতে গড়ে ওঠা দলীয় অফিস করার জন্যে, রাজনৈতিক কাজকর্ম চালানোর জন্যে  বন্দোবস্ত দিয়ে দিতে পারে ৷ রাজনৈতিক দলগুলো তো দেশের শত্রু নয় ৷ তাহলে দেশের আপৎকালীন সময়ে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকা হয় ? অতীত অভিজ্ঞতায় দেখেছি আমার দেশ যখনই সংকটপূর্ণ অবস্থায় পড়েছে , বহিঃশত্রুর আক্রমণের মুখে পড়েছে তখনি আমাদের সংসদে দলমত নির্বিশেষে সকল সদস্য একমত হয়ে যে সময় যে সরকার থেকেছেন তার সময়োপযোগী পদক্ষেপের পাশে দাঁড়িয়েছেন ৷ দেশের সংহতি, সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্যে এই ঐক্যই তো ভারতের চিরন্তন আদর্শ ৷ আশৈশব তো এটাই দেখে এসেছি ৷ তেমনি প্রয়োজনে এই পার্টি অফিসগুলো আপৎকালীন সাময়িক আশ্রয়স্থল হয়ে দাঁড়ায় ৷ যেমন দাঁড়ায় বন্যা কিংবা অন্য কোন প্রাকৃতিক বা মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগের সময় ৷ সাব্রুমের যে দলীয় অফিসটি ভেঙে দেওয়া হল তার একতলায় কয়েকজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ছোটো ব্যবসায়ী ব্যবসা করে প্রতিপালন করতেন নামমাত্র ভাড়ায় ৷ রাজনৈতিক রং দেখে তো এদের ভাড়া দেওয়া হয়নি ৷ তার চেয়ে বড়ো কথা, সাবরুমের কংগ্রেস অফিসই তো ছিল বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রথম আশ্রয়স্থল ৷ এখান থেকেই পরিচালিত হয়েছিল এক নং সেক্টরের বহু কাজকর্ম ৷ বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের প্রথম দলটি সেদিন সাব্রুমের কংগ্রেস অফিসে উঠেছিলেন ৷ তারপর তখনকার ব্লক কংগ্রেস সভাপতি জ্ঞানেন্দ্রনারায়ণ রায়চৌধুরী, কংগ্রেস নেতৃত্ব কালিপদ বন্দ্যোপাধ্যায়, যদুনন্দন সিংহ, আশুতোষ নন্দী প্রমুখ তাঁদের আগরতলায় বৃহত্তর যোগাযোগের জন্যে পাঠানোর ব্যবস্থা করতেন ৷ জিয়াউর রহমান, মাহফজুল বারি ( আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামী) , রফিকুল ইসলাম বীরোত্তম, তরুণ অফিসার কাদের,  শেকান্তর মেম্বারসহ বহু মুক্তিযোদ্ধার স্মৃতিচিহ্ন বহন করে সাব্রুমস্থিত সেসময়ের কংগ্রেস অফিস ৷ অবশ্য সেসময়ে কংগ্রেস অফিসটি ছিল একটি চালাঘর ৷ আরো আগে রাজন্য আমলে এর পাশের দক্ষিণের জায়গায় ছিল রাজার বনকর অফিস ৷ এখান থেকে ফেনি নদী দিয়ে বয়ে নিয়ে যাওয়া বাঁশ ছন প্রভৃতি প্রাকৃতিক সম্পদের ভাইট্টাল কাটতে হত ৷ ত্রিপুরা রাজ্যের ভারতভূক্তির কিছু আগে বা পরে অফিসটি উঠে যায় ৷এমন বহু ইতিহাস জড়িয়ে এই স্থানকে কেন্দ্র করে ৷ প্রতিবছর সাব্রুমে যে বৈশাখী মেলা হয় ৷ সে সময়ে বাইরে থেকে অনেক ব্যবসায়ী আসেন ৷ তাদেরও অনেকে রাত কাটাতেন এই দালানের ছাদে ৷ কতো বলব ৷ আজ সাব্রুমের যিনি জনপ্রতিনিধি,  অল্প কয়দিনের মধ্যে যিনি শান্তি সম্প্রীতি রক্ষায় এবং উন্নয়নমূলক কাজকর্মের জন্যে নিবিড় আত্মনিয়োগ করে দলমত নির্বিশেষে ইতোমধ্যে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ফেলেছেন তাঁরও রাজনৈতিক জীবনের সুরুয়াত হয়েছে এই কংগ্রেস অফিস থেকে ৷ এই দালানবাড়িটি নির্মানে সেদিন তাঁরই মুখ্য ভূমিকা ছিল ৷ তারপর দলীয় অন্তর্কলহে তাঁকে বের হয়ে যেতে হয় এই দালান ৷ সেদিনের নেতৃত্বকে কিন্তু তার জন্যে খেসারতও দিতে হয়েছিল রাজনৈতিকভাবে ৷ জনগণ বর্তমান বিধায়ক শংকর রায়ের পাশেই দাঁড়িয়েছিলেন নীরবে ৷ সাব্রুমের বহু রাজনৈতিক কর্মকান্ডের মূক সাক্ষী আজ ধুলোয় মিশে গেল ৷ এ দালানটিকে রেখে কিছু গঠনমূলক কাজে ব্যবহার করা হলে সরকারী নতুন নির্মান ব্যয়েরও সাশ্রয় হত ৷ ইতিহাসের নির্বাক সাক্ষীও বেঁচে থাকত জনগণের বুকে ঐতিহ্যদালান হিসেবে ৷

Wednesday, May 9, 2018

আপনারে করি উন্মোচন

আমি কিছু বুঝি ৷  আবার কিছু বুঝিওনা ৷ অনেকের চোখের ভাষাই আমি পড়তে পারি ৷ আমার শুভানুধ্যায়ীও আছেন অনেকেই ৷ নইলে বার বার রাজ্যস্তরে পুরস্কৃত হওয়ার জন্যে আমার নাম প্রস্তাবিত হলেও চাপা পড়ে যায় কেন ৷ কেন জাতীয় শিক্ষক হিসাবে নাম মনোনীত হওয়ার পর, বায়োডাটা নেওয়ার পর শেষ মুহূর্তে বাতিল হয়ে যায় ৷ কারা কলকাঠি নাড়ে সব জানি ৷ এরা বাইরে আমার প্রতি মুহূর্তের হিতাকাঙ্ক্ষী ৷ আমার ক্ষতি করার পাপবোধ ঢাকার জন্যেই অবিরাম আমার প্রশংসামুখর থাকে ৷ কাজের বেলা কাজী, কাজ ফুরোলেই আমাকে পাজি বলে ছুঁড়ে ফেলে দেয় ৷ আর কী এখনতো আমার বেলা শেষ ৷ ওপরে থুথু ফেললে নিজের গায়েই পড়ে ৷ অনেকে আমাকে জানিয়েও দেন, আপনার কাছের লোকই তো বিরোধীতা করছে ৷ আমার কিছু যায় আসেনা ৷ বুকে বেঁধে রাখি ৷ আমার একটা খ্যাপাটে স্বভাব আছে আমি জানি ৷ এ বয়সেও বাইক নিয়ে টেপরেকর্ডার নিয়ে রাত বিরেতে বিরেতে বেরিয়ে পড়ি স্বর্ণকণার সন্ধানে ৷ ইচ্ছে হলে লেখি ৷ ইচ্ছে হলে কলম গুটিয়ে রাখি দিনের পর দিন ৷ কোন কাজ করব না বলে  অভিমান করেও কাজ ছাড়া থাকতে পারিনা ৷ দুঃখটা বুকেই পুষে রাখি ৷ খাঁচাছাড়া করিনা ৷ ইনবক্সে গালাগাল খেয়েও আবার পথে নামি ৷ আমি কারো সঙ্গে তুলনায় যাইনা ৷প্রতিদ্বন্দ্বিতায়ও না ৷ আমি নির্জন পথে সবার সাথে থেকেও একা হতে ভালোবাসি ৷ আমি আমার শক্তিকে চিনি ৷সদ্ব্যবহার করিনা ৷ অপব্যবহারও না ৷ এখানেই আমার আমিত্ব ৷

আপনারে করি উন্মোচন

আমি সব বুঝি ৷ অনেকের চোখের ভাষাই আমি পড়তে পারি ৷ আমার শুভানুধ্যায়ীও আছেন অনেকেই ৷ নইলে বার বার রাজ্যস্তরে পুরস্কৃত হওয়ার জন্যে আমার নাম প্রস্তাবিত হলেও চাপা পড়ে যায় কেন ৷ কেন জাতীয় শিক্ষক হিসাবে নাম মনোনীত হওয়ার পর, বায়োডাটা নেওয়ার পর শেষ মুহূর্তে বাতিল হয়ে যায় ৷ কারা কলকাঠি নাড়ে সব জানি ৷ এরা বাইরে আমার প্রতি মুহূর্তের হিতাকাঙ্ক্ষী ৷ আমার ক্ষতি করার পাপবোধ ঢাকার জন্যেই অবিরাম আমার প্রশংসামুখর থাকে ৷ কাজের বেলা কাজী, কাজ ফুরোলেই আমাকে পাজি বলে ছুঁড়ে ফেলে দেয় ৷ আর কী এখনতো আমার বেলা শেষ ৷ ওপরে থুথু ফেললে নিজের গায়েই পড়ে ৷ অনেকে আমাকে জানিয়েও দেন, আপনার কাছের লোকই তো বিরোধীতা করছে ৷ আমার কিছু যায় আসেনা ৷ বুকে বেঁধে রাখি ৷ আমার একটা খ্যাপাটে স্বভাব আছে আমি জানি ৷ এ বয়সেও বাইক নিয়ে টেপরেকর্ডার নিয়ে রাত বিরেতে বিরেতে বেরিয়ে পড়ি স্বর্ণকণার সন্ধানে ৷ ইচ্ছে হলে লেখি ৷ ইচ্ছে হলে কলম গুটিয়ে রাখি দিনের পর দিন ৷ কোন কাজ করব না বলে  অভিমান করেও কাজ ছাড়া থাকতে পারিনা ৷ দুঃখটা বুকেই পুষে রাখি ৷ খাঁচাছাড়া করিনা ৷ ইনবক্সে গালাগাল খেয়েও আবার পথে নামি ৷ আমি কারো সঙ্গে তুলনায় যাইনা ৷প্রতিদ্বন্দ্বিতায়ও না ৷ আমি নির্জন পথে সবার সাথে থেকেও একা হতে ভালোবাসি ৷ আমি আমার শক্তিকে চিনি ৷সদ্ব্যবহার করিনা ৷ অপব্যবহারও না ৷ এখানেই আমার আমিত্ব ৷

Monday, May 7, 2018

রা ই ম ঙ্গ ল



থাকব একা। একাকী চাঁদ যেমন তারার বাতি থেকে

দূরে তার আট কুঠুরি ঘিরে রাখে

সবাই তোমার কাছে যাওয়ার জন্যে

হাহাকার করলেও আমি ব্যাকুল

তোমাকে ছেড়ে থাকবার জন্যে

সারা শরীরে কোলাহল। চোদ্দো ভুবনের

গলি থেকে বেরিয়ে পড়ছে মিছিল

তোমার বাড়ির সামনে গিয়ে দাঁড়াবে তারা

মিছিল থেকে বিস্তৃত দীর্ঘ দৈব আওয়াজ

তোমার দরোজা-জানালার দিকে ছুটে যাবে

আমি ক্রমশ আরো ছোটো পরমাণুবিন্দু আকার

মণিকোঠায় লুকিয়ে নেবো আমার ফণা

তৃষ্ণাকাতর শীতঘুমে বাস্তুরসদ দেবে

তোমার ধামাকাবিকীর্ণ উত্তাপ। আমার ক্ষণশীতল

এই বিরহকালে তুমিও রেগে যাও রাই

আমি তোমাকে না পেয়েই সুখী হতে চাই