Thursday, May 30, 2019

তোমার চুলে জমাট হওয়া
গাঢ় অন্ধকার
সেই আঁধারে মুখ ডুবিয়ে
খুলি হৃদয়দুয়ার

Saturday, May 11, 2019

রাজনৈতিক ভাষণে শালীনতার চাপান উতোর

অশোকানন্দ রায়বর্ধন

কটুভাষণ বা গালাগাল সাহিত্যের অঙ্গ ৷ আর সাহিত্যের গালাগালের মধ্যে শিল্পও থাকে ৷ বাংলার লুপ্তপ্রায় সংস্কৃতি কবিগানে কবিওয়ালারা প্রতিপক্ষকে চাপান-উতোরের মাধ্যমে অত্যন্ত শিল্পময় মন্দোক্তি করতেন ৷ বাংলা কবিগানের যুগে কবিওয়ালাদের মধ্যে ভোলা ময়রা, রাম বসু, ঠাকুর সিংহ ও এন্টনি ফিরিঙ্গি কবিগানের আসরে পরস্পরকে রসব্যঞ্জক গালাগাল দিতেন ৷ সেগুলো যেমন ছিল বুদ্ধিদীপ্ত তেমনি ছিল সাহিত্যরসসমৃদ্ধ ৷ একটি আসরে এন্টনি ফিরিঙ্গির প্রতি ঠাকুর সিংহের চাপান ছিল-'বল হে এন্টনি আমি একটি কথা জানতে চাই/ এসে এদেশে এবেশে তোমার কেন কোর্তা নাই?' এর প্রত্যুত্তরে এন্টনি ফিরিঙ্গিরও বুদ্ধিদীপ্ত উতোরটি ছিল-' এই বাংলায় বাঙালির বেশে আনন্দেতে আছি/হয়ে ঠাকরো সিংহের বাপের জামাই কুর্তি টুপি সব ছেড়েছি ৷' তেমনি রাম বসুর চাপান ছিল-'সাহেব! মিথ্যে তুই কৃষ্ণপদে মাথা মুড়ালি/ও তোর পাদরি সাহেব শুনতে পেলে গালে দেবে চুনকালি ৷' এক্ষেত্রে এন্টনি ফিরিঙ্গির ধর্মনিরপেক্ষ অসাম্প্রদায়িক উতোরটি লক্ষ্যণীয়-' খৃষ্টে আর কৃষ্টে কিছু ভিন্ন নাইরে ভাই/শুধু নামের ফেরে মানুষ ফেরে এও কোথা শুনি নাই ৷' গালাগালকে শ্রীরামকৃষ্ণ দুভাবে দেখেছেন ৷ নটনাট্যকার গিরিশ ঘোষ যখন নেশসক্ত হয়ে শ্রীরামকৃষ্ণকে গালাগাল দিচ্ছিলেন খাওয়ার পাত থেকে তুলে দিয়ে তখন তিনি ভাগনের কাছে অনুযোগ করছিলেন-রাখালে,গিরিশ আমাকে দেড়খানা নুচি খাইয়ে এমন গালাগাল দিলে রা?  আবার কেউ যখন তাঁর কাছে নালিশ করতেন গিরিশ তাঁকে গালাগাল দিচ্ছে বলে ৷ তখন শ্রীরামকৃষ্ণ বলতেন- দে দে ৷ গালাগাল দিতে দে ৷ ওতে বদরক্ত বেরিয়ে যায় ৷ সেকালে গালাগাল ছিল তেমনি ৷

কবিগানের যুগ আর এখন নেই ৷ এখন রয়েছে রাজনীতির মঞ্চ ৷ সেই মঞ্চ থেকে চলে রজনৈতিক প্রতিপক্ষের প্রতি চাপান-উতোর ৷ তার মধ্যেও একসময় সৌন্দর্য ছিল ৷ কিন্তু অতিসম্প্রতি দেখা যাচ্ছে মার্জিত ও মজাদার শ্লেষগুলো যেন কাঁচা খিস্তিতে পরিণত হচ্ছে রাজনেতাদের মুখ দিয়ে ৷ কারো নাম উল্লেখ করে কোনোদিকে ঝোল টানার চেষ্টা করছিনা ৷ খিস্তি ছড়ানোর ক্ষেত্রে পরস্পর প্রতিদ্বন্দ্বীরা কারো থেকে কেউ কম যাননা ৷ এ বলে আমায় দেখ, ও বলে আমায় ৷ 'তরু হতে যেবা সহিষ্ণু, তৃণ হতে দীনতর' কেউই নেই রাজনীতির ময়দানে ৷ কেউ কারো কথা মাটিতে পড়তে দেননা ৷ শূন্যেই ছোঁ মেরে তুলে নেন ৷

এবারের নির্বাচনের প্রচারে রাজনেতাদের পরস্পরের প্রতি আক্রমণের ভাষা কবিগানের চাপান-উতোরকে ছাড়িয়ে খেউড়গানের পর্যায়ে চলে গেছে ৷ কে কতোটা শালীনতার মাত্রা পেরুতে পারেন তারই যেন অসুস্থ প্রতিযোগিতা চলছে এবারের নির্বাচনের প্রচারে ৷ নীতি নিয়ে কথা নেই ৷ উন্নয়ন নিয়ে বার্তা নেই ৷ পরস্পর কুৎসিত ও ঘৃণ্য বাক্যবিনিময়ের প্রতিযোগিতা চলছে ৷ চলছে ব্যক্তি আক্রমণ ৷ সাম্প্রদায়িকতার ইন্ধন ৷ ফলে এইসব রাজনীতিবিদ সম্পর্কে জনমনেও একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে ৷ পরুষবাক্যের মধ্য দিয়ে কী তাঁরা সমাজকে সঠিক দিশা দেখাবেন? 'মানো হি মহতাং ধর্মং' কী তাঁরা ভুলে গেছেন? সম্মান দিলে যে সম্মান পাওয়া যায় এটা কী তাঁরা জানেননা?  রবীন্দ্রনাথ তো বলেছেন-'রাজা সবারে দেন মান/সে মান আপনি ফিরে পান৷' তাহলে?

ত্রিপুরাসুন্দরী মন্দিরে পুণ্যার্থীর লাঞ্ছনা ও প্রতিবিধানের পদক্ষেপ

হিন্দুদের তীর্থস্থানে পান্ডা ও ফড়িয়াদের দৌরাত্ম্য নতুন কোনো ঘটনা নয় ৷ আসামের কামাখ্যাতীর্থ, পুরীর জগন্নাথধাম, কালীঘাটের মায়ের মন্দির, মথুরা, বৃন্দাবন, প্রয়াগ ইত্যাদি ক্ষেত্রসমূহে তীর্থ করতে গিয়ে পান্ডা ও সংশ্লিষ্টদের হাতে নাজেহাল হননি এমন তীর্থযাত্রী কমই আছেন ৷ এইসব তীর্থক্ষেত্রের মধ্যে দুর্নামের দিকে শিরোপার অধিকারী অবশ্যই গয়াধাম ৷ গয়ার পান্ডার অত্যাচার ভুবনবিদিত ৷ বিভিন্ন মন্দিরে পুণ্যকর্মসমূহ সম্পাদনের জন্য পুরুষানুক্রমে নির্ধারিত পুরোহিত তথা পান্ডার সাহচর্য নিতে হয় ৷ এটাই রীতিরেওয়াজ ৷ কিন্তু ধর্মপ্রাণ মানুষের এই দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে এইসব তীর্থস্থানের পান্ডা ও সংশ্লিষ্টরা  পুণ্যার্থীদের উপর একরকম জোরজবরদস্তি করে থাকে ৷ এদের খপ্পরে পড়ে  নিরীহ তীর্থযাত্রীরা অনেকসময় সর্বস্বান্ত হন ৷ এমনকী কখনও কখনও প্রাণসংশয়ও হয় ৷

পান্ডাদের অত্যাচার যে কতোটা অসহনীয় তা স্বয়ং রবীন্দ্রনাথও তাঁর রচনায় উল্লেখ করেছেন ৷ কবিপক্ষে প্রাসঙ্গিকভাবে তাঁর উদ্ধৃতিটি স্মরণ করছি ৷ বিশ্বকবি তাঁর 'পুরাতন ভৃত্য' কবিতার এক জায়গায় লিখেছেন, 'নামিনু শ্রীধামে দক্ষিণে ও বামে পিছনে সমুখে যত/ লাগিল পান্ডা নিমেষে প্রাণটা করিল কণ্ঠাগত ৷' তীর্থক্ষেত্রে নামার সঙ্গে সঙ্গে পান্ডা ও তাদের দালালরা শিকার ধরার মতো পুণ্যার্থীকে চারপাশ থেকে ঘিরে ধরে ৷ শুধু রবীন্দ্রনাথই নন ৷ এইসময়ের সাহিত্যিক তথা আমাদের রাজ্যের কথাসাহিত্যিক এল. বীরমঙ্গলের 'পিন্ডদান' গল্পেও এইধরনের অভিজ্ঞতার বর্ণনা রয়েছে ৷ সেখানে অবশ্য মণিপুরি পান্ডার জুলুমের কথা রয়েছে ৷ অনেক কায়দাকানুন করে গল্পের দুই মণিপুরি ভাইকে পরলোকগত পিতার পিন্ডদানকর্ম শেষ করে বেরিয়ে আসতে হয়েছে ৷

আমাদের রাজ্যের প্রসিদ্ধ তীর্থক্ষেত্র মাতাবাড়ির ত্রিপুরাসুন্দরী মন্দির ৷ কথিত আছে সতীর দেহাংশ পড়েছিল এইস্থানে ৷ তাই এটি একান্ন পীঠের এক পীঠ ৷ বলাবাহুল্য অন্যান্য তীর্থক্ষেত্রের তুলনায় কিছুটা কম হলেও এই তীর্থক্ষেত্রেও পান্ডা ও সংশ্লিষ্টদের জুলুম বিদ্যমান ৷মন্দিরে পুজো দেওয়া, দোকান থেকে পেঁড়া কেনা, ভোগ দেওয়া, ভোগসংগ্রহ, বলিদান, একটু অসময়ে যানবাহনে যাত্রীভাড়া ইত্যাদিকে কেন্দ্র করে প্রায়শই এখানে ঝুটঝামেলা হয় ৷ অনেকে অন্নপ্রাশন ও বিবাহানুষ্ঠানও এই মন্দিরপ্রাঙ্গনে সারেন ৷ আর্থিক দৈন্যতার কারণে, বিনা পণে বা প্রণয়ঘটিত কারণে অনেকে এই মন্দিরে বিবাহানুষ্ঠানও সম্পন্ন করেন ৷ তারজন্যে সরকারি তরফে নির্ধারিত ফি নেওয়া, রসিদ দেওয়া ও সইসাবুদের ব্যবস্থাও রয়েছে ৷ কিন্তু এজাতীয় অনুষ্ঠানে মন্দিরের পুরোহিত ও সংশ্লিষ্ট সকলে কাল্পনিক অনৈতিকতার গন্ধ পান ৷ এতে তাদের পোয়াবারো ৷ এক্ষেত্রে তারা উদার না হয়ে বরং বর ও কনেপক্ষের উপর আর্থিক জোরজুলুম করেন ৷ তাদের দাবিমতো টাকাপয়সা না ছাড়লে মানসম্মান নিয়ে মন্দিরচত্বর থেকে বেরোনো দুস্কর হয়ে দাঁড়ায় ৷ এক্ষেত্রে এখানে অবস্থানরত দায়িত্বপ্রাপ্ত আরক্ষাকর্মীরাও ভক্ষক হয়ে ওঠেন ৷ এছাড়া রাজ্যের বাইরে থেকে এখানে মানতরক্ষার জন্যে কেউ এলে তাদের অপরিচিতির সুযোগে জোরজুলুম করার অভিযোগ বহু রয়েছে ৷ বহির্রাজ্যের পুণ্যার্থীরা তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়েই এখান থেকে যান ৷

সম্প্রতি মাতাবাড়িতে পুণ্যার্থীর এমনই এক লাঞ্ছনা ও প্রশাসনের পদক্ষেপের ঘটনায় সকলের টনক নড়ে যায় ৷ সংবাদে প্রকাশ গত পাঁচ মে গোমতীজেলার উদয়পুর মহকুমার গাথালং এলাকার বাসিন্দা পাতালকুমার নোয়াতিয়া স্বপরিবারে মাতাবাড়িতে পুজো দেওয়ার জন্য যান ৷ তাঁরা গাড়ি করে কল্যাণদিঘির পাড়ে পৌঁছাতেই কয়েকটি পেঁড়া দোকানের কর্মীরা তাঁদের ঘিরে ধরে প্রত্যেকেই তাদের দোকান থেকে পেঁড়া কেনার জন্যে টানা হ্যাঁচড়া শুরু করে ৷ এতে পাতালবাবুর পরনের পোষাক পর্যন্ত ছিঁড়ে যায় ৷ লাঞ্ছিত ও ক্ষুব্ধ পাতালবাবু সুবিচার চেয়ে বিষয়টি মন্দিরের সেবাইত তথা গোমতীজেলার জেলাশাসকের গোচরে নেন ৷ অভিযোগ পেয়ে জেলাশাসক সঙ্গে সঙ্গে ঘটনার সরেজমিনে তদন্ত করেন ৷ তদন্তের পর তিনি তিনটি পেঁড়ার দোকানমালিককে শোকজ নোটিশ দেন ৷ নির্দিষ্টসময়ের মধ্যে অভিযুক্ত পক্ষ থেকে কোনো সদুত্তর না পেয়ে জেলাশাসক  তিনটি দোকানকে দশ মে থেকে একমাসের জন্যে দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন ৷

লক্ষ্যণীয়, এদের ঔদ্ধত্যের মাত্রা এতো বেশি যে তারা মন্দিরের প্রধান সেবাইত তথা জেলাশাসকের নির্দেশকেও গ্রাহ্যের মধ্যে আনেনি ৷ এদিকে জেলাশাসকের গৃহীত পদক্ষেপে সর্বত্র একটা ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেছে ৷ সম্প্রতি রাজ্যের যোগাযোগ ব্যবস্থা সুগম হওয়ার ফলে এই মন্দিরে পুণ্যার্থীর সংখ্যাও বাড়ছে দিনকে দিন ৷ ফলে অচিরেই এইসব নানাধরনের অসভ্যতা ও দৌরাত্ম্য ঠেকানোর জন্য প্রশাসনিক নির্দেশিকা যেমন জরুরি তেমনি এই নির্দেশিকা ঠিকমতো মানা হচ্ছে কিনা তাও দেখা প্রয়োজন বলে সংশ্লিষ্ট সকলমহল মনে করছেন ৷ পাতালবাবুর নিগ্রহের ঘটনা সেইদিকেই নির্দেশ করছে ৷

Thursday, May 9, 2019

ভাঙছিস মূর্তি ভাবছিস পাথর
মনে রাখিস দুর্নামেরই মাখছিস আতর

*********************************

সামার আছে, ক্যাম্প নাই
সামার ক্যাম্প নাম তাই ৷

******************************--

Wednesday, May 8, 2019

রাঙিয়ে দিয়ে যাও গো

ত্রিপুরার সৃজনক্ষেত্রে আজ অস্থিরতা ৷ অবিশ্বাসের অশনিনির্ঘোষ ৷এই বিষবৃক্ষের বীজ অনেক আগেই পোঁতা হয়েছিল ৷ আজ সে গাছে ফল ধরেছে ৷ তার বিষক্রিয়ায় আজ আমরা সবাই লক্ষীন্দর ৷ ত্রিপুরা রাজ্যে আমরা যারা সুন্দরের আরাধনাকে জীবনের আর দশটা নিজস্ব কর্মের সঙ্গে জুড়ে নিয়েছি তারা কেউই ব্যক্তিগত লাভালাভের মোহে সেটা করছিনা ৷ কর্মক্ষেত্রে পরিচিতির পদমর্যাদার স্তরবিন্যাস থাকলেও সাহিত্য ও সংস্কৃতির অঙ্গনে সে ব্যবধান থাকেনা ৷ সেখানে সবাই একে অন্যের সতীর্থের মতো একাত্মতা অনুভব করি ৷ আমরা জানি আমাদের এই প্রান্তিক ভুবনের সৃজন বৃহত্তর বঙ্গসংস্কৃতির অঙ্গনে স্থায়ী দাগ রাখার মতো সৃষ্টি এখনও করে উঠতে পারিনি ৷ কিন্তু আমাদের সম্মিলিত প্রয়াস রয়েছে স্থান নেবার জন্যে ৷ সেকারণেই আমরা একে অন্যের সৃষ্টিকে তুলে ধরার প্রয়াসী হই ৷ এভাবেই ত্রিপুরার প্রত্যন্ত প্রান্ত থেকেও আজ উঠে এসেছেন সৃজনকর্মীরা ৷ সমৃদ্ধ হয়েছে আমাদের দীন আঙিনা ৷ কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কোনো উদ্যোগ নিলে শরিক হবার বা পাশে দাঁড়াবার সুযোগ নিই ৷ কিন্তু আমরা এও লক্ষ্য করেছি, কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কোনো উদ্যোগ নিলে অন্য আর একদল সেটাকে পাশ কেটে যান ৷ অনুষ্ঠানের ধারে কাছে থাকেননা কিন্তু বাইরে থেকে শলা নাড়েন ৷ উপযাচক হয়ে আগত অতিথিদের শুভাকাঙ্ক্ষী হয়ে ওঠেন ৷ উদ্যোক্তাদের নির্ধারিত পরিকল্পনায় ব্যাঘাত ঘটান ৷ বাংলাদেশ থেকে আগত অতিথি যেমন এখানে নৈশভোজের আসরে লাঞ্ছিত হয়েছেন তেমনি আমাদের রাজ্যের প্রিয় কবিদের বিরুদ্ধে ওদেশের কেউ সোস্যাল মিডিয়ায় বিশ্রী স্ট্যাটাস দেয় তখন এরাজ্যেরই কোনো সম্মানিত ব্যক্তিত্ব মুহূর্তে সেই স্ট্যাটাসকে ছড়িয়ে দিয়ে সেই নোংরামিকে উসকানি দেন ৷ আর নিজেদের মধ্যে ফেসবুকে ল্যাং মারামারি, কাউকে ছাগদুগ্ধ সেবনের পরামর্শ, কারো ব্যক্তিগত বিষয় উন্মোচন এসবতো আকছারই ঘটেছে ৷ যাঁর অনুষ্ঠান সম্পর্কে কোনো অতিথি ব্যক্তিত্ব ফিরে গিয়ে বিষোদ্গার করেন, তাঁর পাশে কেউ প্রতিবাদ করার পর দেখা যায় কোনো এক উজ্জ্বল ভোরে দেখা যায় সাপে নেউলে একসাথে সেলফিশোভন হাসি বিতরণ করেন ৷ এও এক আজব আচার ৷ ফারাকটা হলো একসময়ে অঘটনগুলোর কর্তারা স্বনামেই কাজগুলো করেছেন ৷ আর আর আজকে মুখটাকে 'চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা' করে পরিচিতিকে অর্ধনারীশ্বর করে বেদনাদায়ক ঘটনাগুলো করছেন ৷ এখানে আমি কারু সাহসের বা ভীরুতার তুলনা করছিনা ৷ পুরীষ উভয়েই ঘাঁটছেন ৷ কেউ কেউ কানকথায়ও প্রিয়জনকে ভুল বুঝছেন ৷ বেদনাহত হচ্ছি প্রিয়জনের লাঞ্ছনায়, মানসিক যন্ত্রণায় ৷
অবসান ঘটানো যায়না কী এই কন্টকাকীর্ণ পরিবেশের ৷ এই অবিশ্বাস ও দ্বন্দ্বের ৷ আসুন না, তরুণ কিংবা বরিষ্ঠজনেরা ৷ বসুন না সামনাসামনি ৷ রাগ অভিমান ঝেড়ে ফেলে এই কিরাতভূমির সৃজনকে সম্মিলিতভাবে তুলে ধরি বৃহতের আঙিনায় ৷ জীবনের যে সিঁড়িতে এসে পৌঁছেছি ৷ যে কোনদিনই পুষ্পস্তবক আমার জন্যে খুঁজে রাখতে হতে পারে ৷ আসুন না এই ভূমি আর তার প্রকৃতি ও মানুষকে ভালোবাসায় ভরিয়ে দিই ৷ সেই বিরাটপুরুষের জন্মদিনে এই বোধটাই ছড়িয়ে দিই সকল প্রাণে ৷

Sunday, May 5, 2019

ভা ব না

যখন সময় পাই , তোমার কথাই ভাবি
যখন সময় নাই,  তোমার কথাই ভাবি
যখন সময় পাই না, তোমাকে ভাবতে চাই
আর যখন অফুরান সময়
তোমার ভাবনাতেই সারা

Thursday, May 2, 2019

শী ত ল ক্ষ্যা

নদীকে মা বলে জেনেছি
আমার সত্তা নদীমাতৃক

হে পূণ্যতোয়া তোমার পানিতে জুড়াই শরীর
তোমার পানিতে আমার শস্য ও সম্পদ
তোমার জলেই তো আমার পিতৃপুরুষের তর্পন

কেন তবে শীতলতা হারায় শীতলক্ষ্যা
কেন তবে ক্ষীরের বদলে ভাসে রক্ত
ভাসে হাজার রক্তজবা

Wednesday, May 1, 2019

খা গ ত র্প ণ

কলমে সৃজন হয় ৷ মসীতে রক্ত ঝরে ৷ খাগবিন্দু ঘামের আলপনা ৷কলম যে হৃৎশ্রমের হাতিয়ার ৷ কলমের অগ্রভাগে ভেসে ওঠে যে নির্মিতি, অক্ষরের অলংকারে জেগে ওঠে যে নন্দন, সেতো অন্নস্বপ্ন ৷

আগত সন্ততিজীবন ও অষ্টপ্রকোষ্ঠের নবদ্বারের বাঁধুনির মৃদঙ্গদেয়াল ঘিরে যে ঘর্মাক্ত আলপনা সে যে মেধার গঙ্গামৃত্তিকা ৷ এ সুলক কেবল মসীশ্রমিকই জানে ৷

কলমও নির্মমরাজের বিপরীতে আওয়াজ তোলে ৷ স্লোগান রচনা করে ৷ কলম ঊষার আকাশে গায় জাগরণীগান ৷

কলমের মাধুকরী আর কর্মজীবীর মোটাভাতের গন্ধ এক ৷ আশ্চর্য নীবার ৷ খাগের অন্তরে নীরবে বাজে হাতুড়িধুন ৷ কাস্তেকিঙ্কন ৷

কলমের নিবেদন শুভকালের প্রত্যাশায় ৷ কলম তখনই আয়ুধ যখন ক্রোধ কুসুমিত হয় কৃষ্ণচূড়ার আগ্নেয়শাখায়

৷ যদি কোনো হন্তারক ক্রুশকাঠের মতো  কলমকে বয়ে নিয়ে যায় বধ্যভূমির দিকে ৷ সম্মিলিত কলমমজুরেরা দাঁড়িয়ে যায় কলমের চারপাশে ৷ ভীরু হন্তারক পেছনে সরে যায় ৷

মসীমজুর কলমের কল্পনায় আঁকে ভুবনপাহাড়ের খোলা আকাশ ৷ লিখে যায় শিল্পগ্রামের অমৃতকবিতা ৷ জীবনীশোধক কবিতা ৷

প্রতিটি মসীজীবীও শ্রমিক ৷ অন্নগন্ধ কিংবা সৃজনসৌরভ তারও শরীরের মোক্ষম চলাচল ৷ রক্ততঞ্চন ৷ প্রতিটি মে-দিন তার জরুরি উদযাপনের দিবস ৷ শব্দশ্রমিকের দৃঢ়আঙুল জাগবার দিন ৷ অনিবার্য পালনেই তার সম্মান ৷