Tuesday, May 30, 2017

ভাব

তোমার চুলে জমাট হওয়া
গাঢ় অন্ধকার
সেই আঁধারে মুখ ডুবিয়ে
খুলি হৃদয়দ্বার

Saturday, May 27, 2017

অন্ধবাথান

যে জনপদে কোলাহল নেই সে মৃতবৎ ৷
প্রাণের সঞ্জীবনী সঙ্গীতের রণন থাকে না চরাচরে

এখানে দেখি প্রতি সন্ধ্যার উলুময়তার পর
হঠাৎ নেমে আসে নির্লিপ্ত নিঝুম ঝিঁঝিঁর ডাক
আঁধারের আস্তানায় গুঞ্জন থামিয়ে দস্তানা খুলে
হাত বাড়ায় নৈশব্দের দানোজানোয়ার

পড়শির মোকাম জুড়ে ঘুমের সম্মোহন
সব যেন রূপকথার জাদুপুরীর  নিস্তব্ধতা
কোথায় হাত বাড়াবো আমি, কোন অন্ধবাথানে?

কালু কামার

কালু কামার ৷ কে কালু কামার?  গায়ের রঙ কালো বলে কী কালু কামার?  নাকি কালো পাথরের সাথে ছেনিসঙ্গমে জাগিয়েছে প্রাণ তার জন্যে? যে দেবতারা জীবকে সৃষ্টি করে বলে অহংকৃত মিথমগজ জনারণ্যে দাপিয়ে বেড়ায়,  সেই দেবতার জন্মদাতা কালু কামার?

এতোবড়ো ধৃষ্টতার জন্যেই ঊনকোটি দেবতারা স্বীকৃতি দেওয়ার সাহস পেলি না তোদের জনককে ৷

পরিচয়হীন কালু কামার ৷ মজাদার বাক্যবন্ধের জন্যে বিখ্যাত যে রমাকান্ত কামার ৷ তেমন কেউও হতে পারল না কালু কামার ৷

যুগে যুগে  পাহাড় কন্দরে জন্ম ও লালনে দেবতা গড়ে তোলে  তিলে তিলে ঘাম ও রক্তে ৷
নিভৃত লুঙ্গায় মশালের আলোয় আর মশার কামড়ের যন্ত্রণা ভুলে যে দেবকুলকে গড়ে তোলে কালু কামার,

ত্রিভুবনবাসের আভিজাত্যে তারা কালু কামারকে চেনে না ৷ পিতা নেই তাদের ৷ তাদের গোষ্ঠীপতি স্বয়ম্ভুনাথ ৷ ঊনকোটিপতি ৷

কালু কামার আজো সাব অল্টার্ণ একলব্যপ্রতিম ৷

Friday, May 26, 2017

তালুবন্দী

একাধিক ভাষা জানা থাকলে ভাষাশিক্ষার্থীর সামনে পাঠদান খুবই সহজ হয় ৷ ভাষা জানার অভিজ্ঞতাকে আমি ক্লাসে ব্যবহার করে বেশ সুফল পেয়েছি ৷ বাংলা ও তার প্রতিবেশী দু তিনটে ভাষায় আমি মোটামুটি বলা, পড়া আর লেখার কাজ চালিয়ে যেতে পারি ৷ আর বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক বাংলা আমি যথাযথ বাচনভঙ্গিতে অনায়াসে বলে যেতে সক্ষম ৷ বাংলা ব্যাকরণ পাঠদানের সময় বেশ কার্যকরী ভূমিকাও গ্রহণ করেছে ৷ বিশেষত ভাষাতত্ত্ব পাঠদানের সময় বাংলা বিভিন্ন উপভাষাসমূহের আলোচনার সময় সেগুলোর উচ্চারণ সহযোগে উদাহরণ উপস্থাপন করলে শিক্ষার্থীরা সহজে বিষয়টা বুঝে নিতে পারে ৷
        শিক্ষার্থী বাংলার যে অঞ্চলের অধিবাসী হোক না কেন তাকে মান বাংলায় শিক্ষা গ্রহণ করতে হয় ৷ ফলে বিশেষ অঞ্চলে বসবাসকারী শিক্ষার্থী বাঙালি হলেও তার বাংলা শব্দভান্ডার দুর্বল থাকে ৷ মান বাংলায় ব্যবহৃত কোন বিষয় সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীর অজানা হলে সেটা বোঝানোর জন্যে তার নির্দিষ্ট আঞ্চলিক বাংলার শব্দভান্ডারের শরণাপন্ন হতে হয় এবং সেখান যথাযথ প্রতিশব্দ নিয়ে সমস্যা নিরসন সম্ভব হয় অর্থাৎ শিক্ষার্থীকে সংশ্লিষ্ট শব্দ চেনানো বা বিষয় বোঝানো সহজ হয় ৷
     বাংলা ব্যাকরণে 'বর্ণের উচ্চারণ স্থান' নামে একটা অধ্যায় আছে ৷ সেখানে বাকযন্ত্রের বিভিন্ন স্থানে জিহ্বার স্পর্শানুযায়ী বিশেষ বিশেষ বর্ণের বিশেষ বিশেষ নাম রয়েছে ৷ সেই অনুযায়ী কন্ঠ্যবর্ণের উদাহরণ হিসেবে ক‌,খ,গ,ঘ, ঙ কে সহজেই চেনানো বোঝানো যেত ৷ কিন্তু তালব্যবর্ণ, মূর্ধ্যবর্ণকে বোঝাতে বেশ বেগ পেতে হত ৷ দুটোর উচ্চারণ স্থানই আমাদের মুখগহ্বরের ওপরের দিকের শক্ত অংশ ৷ দন্ত্যমূলের পরে যে শক্ত অংশ সেখানে জিহ্বার স্পর্শ পেয়ে উচ্চারিত হয় চ,ছ, জ,ঝ,ঞ ৷ এগুলো তালব্যবর্ণ ৷ আর এই শক্ত অংশের পরে ওপরের দিকের শক্ত অংশে জিহ্বার স্পর্শে উচ্চারিত হয় ট,ঠ,ড,ঢ,ণ ৷ এগুলো মূর্ধ্য বর্ণ ৷কিন্তু পুরো শক্ত অংশ এলাকাকে মান বাংলায় বলা হয় তালু ৷ বিভাজন করলে সম্মুখ তালু ও পশ্চাৎ তালু ৷ কিন্ত সমস্যা হল এই যে, পূর্ববঙ্গের বিভিন্ন আঞ্চলিক বাংলায় একে তালু বলে না ৷ আর তালু বলে এই অঞ্চলে অন্য তিনটি প্রত্যঙ্গ চিহ্নিত ৷ হাতের চেটো - তালু, পায়ের তলা- তালু আর মাথার ওপরের বহিঃত্বক ৷- তালু ৷ ফলে এ জায়গাটায় এসে শিক্ষারথীরা গুলিয়ে ফেলত ৷ তালব্য বর্ণটা যদিও বা কোনোরকমে বোঝানো যেত ৷ মূর্ধ্য বর্ণে এলে জটিলতা বেড়ে যেত ৷ এক্ষেত্রে আমি একটা মজার চুটকির আশ্রয় নিতাম ৷ গল্পটা এইরকম ৷ নতুন জামাই খেতে বসেছে ৷ শাশুড়ি শুরুতেই ভাতের সঙ্গে দিয়েছেন গরম আলুসেদ্ধ ৷ জামাই ভাতের সঙ্গে আলুসেদ্ধটা মেখে প্রথম গ্রাসটা মুখে তুলতেই গরম আলুসেদ্ধ গিয়ে আটকাল মুখগহ্বরের উপরের অংশে ৷ যন্ত্রণায় জামাই বাবাজি  মুখ উপরে তুলে হাঁ করে ছনের ছাওয়া রান্নাঘরের বাঁশের কাঠামোর দিকে তাকিয়ে মুখে হাওয়া টানছে ৷ বুদ্ধিমতী শাশুড়ি বুঝতে পেরে মজা করে জামাইকে জিজ্ঞেস করছেন, উপরের দিকে কী চাইতাছো বাবা ৷ জামাইও সম্বিৎ ফিরে পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে বুদ্ধিদীপ্ত জবাব দেয়, না মা, দ্যাখতাছি  ইডি কোন ঝাড়ের বাঁশ ৷ শাশুড়িও মুহূর্তের মধ্যে জবাব দিলেন, ইডি টাকরাপোড়া ঝাড়ের বাঁশ ৷ আমি বলতাম শিক্ষারথীদের, বুজছো নি ৷ এই টাকরাই হইলো মূর্ধা ৷ জিহ্বা এইখানে ছুঁইয়া যে বর্ণগুলি উচ্চারিত হয় সেগুলি মূর্ধ্য বর্ণ ৷ক্লাসশুদ্ধ হাসিতে ফেটে পড়ে জবাব দিত চিনছি স্যার ৷ সারাজীবনেও ভুলতাম না ৷

Monday, May 22, 2017

এপ্রিল ফুল


মেইলবক্স খুলে দেখতে চাইছি কে আজ বোকা বানাল এদিনে
তেমন কোনো হাস্যকর প্রয়াসের কোনো ছাপ নেই
কেবল পাতার পর পাতা জুড়ে কানার মাতম
অশ্রুসিক্ত ইমোজি সব উঠে আসছে ওস্তাদজির সানাই হয়ে
আর টাইমলাইনের পাতা জুড়ে ঘন ঘন ট্যাগ
ভয়ংকর উল্লাসে ফেটে পড়া সব হিংসাময় সব বসন্তকথা

আমার চারপাশের বাতাস ভারি হয়ে আছে
পঞ্চাশ হাজার মুখের করুণ বৃত্ত প্রশ্নচিহ্ন হয়ে দুলছে
এ ভূখন্ড সীমিত হওয়ায় কেউই অপরিচিত নয়,
সবারই হাল হকিকৎ জানা ৷ উনিশ বিশ সবাই সমান বিত্তবান ৷
আমার জনপদে এখন মন্বন্তরের নীরবতা নেমেছে
আশাহত কুপিবাতি হাওয়ায় কাঁপছে, কখন বুঝি নিভে যায় ৷

এই অন্ধকারেই দেখি একদল মর্ষমান শরীর ডঙ্কা বাজিয়ে মশালনাচে নেমেছে ৷ কী তীব্র তাদের হল্লাবোল!

ক্রমশ পাথর হয়ে খসে পড়ে যাচ্ছে অজস্র কান্নামুখ
আর উল্লসিত হিংস্র অবয়বগুলো শ্বাপদ হয়ে বেরিয়ে পড়ছে ৷

প্রতিবেশী বলে আর কেউ নেই মানুষের শরীর নিয়ে
লক্ষ্মণরেখার দুইপাশে অসহিষ্ণু খাদক এবং অসহায় খাদ্য

আজ বসন্তপুষ্পের দিনে এভাবেই সাজানো আমার প্রোফাইল ৷

রাই

ডাকব বলে এসেছিলাম ডাকতে পারি নি
মুখের ভাষা বুকেই রইল মনোহারিনী
হৃদয়ে কী আগল ছিল দরজায় ছিল খিল
যমুনার জল সেই শোকেই কী ধরেছে রঙ নীল
ও কিশোরী জানালে না তো কখন যাব আবার
কখন আবার সময় হবে তোমায় কাছে পাবার
হা-হুতাশ বুকের বাতাস লুকিয়ে রাখি তাই
তোমার বুকেই ঘর বানাব ঘর পালানো রাই

ভাষা

দূরের সাম্পান থেকে তোমার উঁকিঝুঁকি আমি তার নাগাল পাই না, কিংবা হদিশ

নৌকোর বুকে লাগা নদীর ছলাত্ছল ঢেউয়ের ইশারায় কী একই ভাষ্যপাঠ

চাঁদ

জোছনা যখন সাঁতার কাটে
অন্ধকারকে দুপাশে ঠেলে দেয়

চাঁদের ডিঙি এগিয়ে যাবার পথে
তারার দল খই ছিটিয়ে যায়

আঁধারমঞ্চের পরপারে লালভোর
সাজগোজ করে বসে থাকে
কখন পাখিরা একসঙ্গে ডেকে উঠবে

চাঁদ নীরবে এগোয় নির্ধারিত কক্ষপথে ৷

তাগিদ

সদ্য পাটভাঙা মৌসুমী মেঘ উড়ে এসে 
উঠোনের উত্তর কোনায় বাতাবি লেবুর
খইফোঁটা ফুলের গন্ধে গাঢ় নিঃশ্বাস নেয়

চরাচর নিঝুম হয়ে গেলে রহস্যে পরকিয়া
চিঠিতে শব্দ উঠে আসে হামাগুড়ি দিয়ে

নিদাঘের তাপমাত্রা কমে এলে তুমি নাকি
ভালোবাসার জন্যে ভাটিয়ালি বেছে নাও

ঘাট থেকে জল তুলে নেয়ার কালে কালিয়াভীতি
নতুন করে ব্রজবুলি লেখার তাগাদা শোনায়

ঘোমটা থাক বা না থাক
তোমার মুখের স্মিতভুবনই এখন
আমার গোপন চাবিকাঠি
সে কী তোমার জানা আছে?

Sunday, May 21, 2017

খোঁজ


অশোকানন্দ রায়বর্ধন
যে অচিন পাহাড় জুড়ে চর্যার হরিণ দৌড়ে বেড়ায়
সেখানে সূর্যোদয় আটকে গেছে যুথমেঘের আবরণে
কোথায় হরিণীর প্রিয়পুরুষ এই মেঘমাখা পাহাড়পুরে
আড়ালে আড়ালে থেকে ছলবার্তা ছড়িয়ে দেয় চারপাশ
আসঙ্গমাতাল মৃগীর হৃদয় তোলপাড় খোঁজে মাদকধ্বনি
আর তীব্রদৌড়ে তোলপাড় করে ফেলে স্থবির পাহাড়

Saturday, May 20, 2017

ভাইফোঁটা


আজ সকালে রওনা হলাম আগরতলার পথে ৷ বাসে প্রচন্ড ভিড় ৷ ভাইফোঁটাকেন্দ্রিক গমনাগমন ৷ আমার জন্যে ভাইফোঁটা নেই ৷ অভাগা আমি ৷ গিন্নিঠাকরুণ ভাইদের ফোঁটা দেবেন ৷নেমনতন্ন করেছেন ৷ পরের তেলে নাকি বামুন সুন্দর ৷খরচাপাতি দিকটা দেখতে আমাকে রওনা হতে হল ৷ যাক গে সে সব ব্যক্তিগত কথা ৷ সাব্রুম থেকে রওনা হবার জন্যে বাসে উঠেই দেখি সব জানালার সঙ্গের সিটগুলো দখল হয়ে গেছে ৷ শুধু বাঁদিকে পেছনের চাকার ওপর যে সিটটা পড়ে সেটা খালি ৷ যাত্রাপথে থ্যাকনার ভয়ে কেউ ওখানে বসে নি ৷ আমি ভাবলাম, মরা মাছ ভাঙা ডুলা ৷পড়ে থাকব একপাশে ৷ মনুবাজার আসার পর আমার সামনের ও পাশের সিটের দুজন নামলেন শুধু ৷ সেখান থেকে এক মহিলা সঙ্গে দুটো বাচ্চা নিয়ে উঠলেন ৷ বড়োটি মেয়ে ছোটোটি ছেলে ৷ মহিলা বিধায় কনডাক্টর তাঁকেই সিটের সুযোগ দিতে চাইলেন ৷ দুটো বাচ্চাই গাড়িতে বমি করে ৷ তাঁরা পাশাপাশি বসতে চাইছেন ৷অথচ সুযোগ নেই ৷ বাচ্চা দুটো আমার সামনের সিটে দিদির কোলে ভাই বসল ৷ ভদ্রমহিলা আমার পাশের সিটে বসলেন ৷ কিছুদূর যাওয়ার পর সামনের সিটের বাচ্চার অস্বস্তি শুরু হল ৷ দিদি ডাকছে মাকে ৷ মা সামনের ভদ্রলোককে জানলার সিটটা বাচ্চাকে ছাড়ার জন্যে অনুরোধ করে ও দাদা, ও দাদা বলে ডাকছেন ৷কে শোনে কার কথা ৷ ভদ্রলোক মটকা মেরে ঘুমের ভান করে পড়ে রয়েছেন ৷মহিলাটি আমাকেও সাক্ষী করছেন, দেখছেন নি দাদা, অ্যাত ডাকতাছি ৷তাইনে শুনতাছে না ৷পুলাডা ত তাইনের গাঅ বমি কইরা দিব ৷ ইতোমধ্যে মেয়েটিরও অস্বস্তি শুরু হয়েছে ৷ ভদ্রমহিলা অসহায় বোধ করছেন ৷ আমি আমার সিট ছেড়ে উঠে বললাম, আপনি বাচ্চাদের এখানে নিয়ে আসুন ৷আমি ওদের সিটে বসছি ৷ ভদ্রমহিলা হাতে চাঁদ পেলেন ৷ আপনে যাইবেন নি দাদা? আমি বললাম, হ্যাঁ, আপনি ডাকুন তাদের ৷
পথে আর কোনো কথা হয় নি ৷ ছোটো ছোলেটা মাঝে জিজ্ঞেস করছিল, আঙ্কেল তোমার নামটা কী ৷ আমি কিছু বলিনি ৷ মাঝে ওকে খেপিয়ে দিচ্ছিলাম ৷ আজকে ভাইফোঁটা না ৷ দিদি কী দেবে জিজ্ঞেস কর ৷ বাকী রাস্তাটা ভাইবোনেতে খুনসুটি করছে দেখলাম ৷ ওরা উদয়পুর রাজারবাগ নামল ৷ ভদ্রমহিলা নামার সময় আমার পাশ দিয়ে যেতে যেতে বললেন, আইচ্চা যাই দাদা ৷ ওর মুখের ভাষায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশের অভিব্যক্তি স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল ৷ আমি শুধু হেসে মাথা নাড়লাম ৷ পথে পাওয়া এই অচেনা বোন আজ আমায় যেভাবে দাদা বলে কৃতজ্ঞতা জানাল মনে হল তার অদৃশ্য হাত আমার কপালে ফোঁটা দিয়ে গেল ৷

হিমঘর


অঘ্রাণবিধূর কুয়াশাপিয়ানো, তোমার করুণ মূর্ছনায় আমাকে কাঁদিও ৷
কোমল ঝরনার স্বচ্ছ গভীরের নুড়ির চলন যেন দিকভুল
করে থমকে যায়
নোঙর
-------------------------------------------
সামনে খ্রিস্টমাস ৷
দিঘল ছায়ার গীর্জা মূক হয়ে আছে
ঝাউবনের পাশে ৷
বাতাস হিমস্নান মিশিয়ে পথ খুলে রেখেছে
কুমারী মেরির জন্যে ৷
ভালোবাসাভর্তি একটা নৌকো
সহসাই নোঙর করার কথা
দুখি মানুষ সব, পারে এসে দাঁড়াও

সংক্রান্তি

তোমার হাত কী মোহনীয় হয়ে উঠবে এই সংক্রান্তির সন্ধ্যায়
নিকোনো উঠোন আলপনায় রাঙানো হয়ে গেলে ক্লান্ত হাত
পড়শির পরশ চাইবে নিভৃতে অন্তত প্রশংসামুখর দুচোখ
যেমন মাহেন্দ্রসূর্য কুসুমশোভন হাসিতে স্বচ্ছ উঠোনে বুলোবে চোখ
পিটুলিগোলার রঙ ভেসে উঠতেই
তোমাকেও মনে হয় সেজে উঠেছ
মাঘসকালের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে
বুড়ির ঘরের সামনে যেন আগুন উত্তাপের একমাত্র পরিষেবাপুষ্ট
রক্তিম আঁচের আভায় একমাত্র তুমি যেন সুন্দরী হয়ে ওঠো কুয়াশাভোরে
পৌষের শেষ সকাল এভাবেই প্রাতঃভ্রমণ সারে তোমাকে নিয়ে ৷

ঠিকানা


ভাবের বাসরঘর থেকে জমকালো বাসনকোসনের
আওয়াজ ওঠে ৷ শিকের ঝুলন্ত হাঁড়িতে প্রেমের রসমালাই ঝোলে আর দোলে
উসখুস ঠোঁট খুঁজে ফেরে গাঢ় চোখ
যে চোখে এক ধূপছায়া ইসারার ঝিলিক
ভাব না জানলে লেনাদেনা বন্ধ করার
কোনো হেতু নেই ৷ পদ্মরেণু গায়ে মেখে
ভ্রমর উড়ে যায় প্রজন্মকুঠুরির দিকে ৷
তার প্রলুব্ধ পিরিতের স্থায়ী মোহর যেন
থেকে যায় অনন্তপাথার জুড়ে ৷
সব পিরিতই ঠিকানা খুঁজে গৃহবাসী হয় ৷

ব্যর্থ বার্তা


পরিযায়ী গাছের বিশাল ডানা আঁধার বাড়িয়ে তোলে
তাকে ছাড়াবার কোনো মিতকাম প্রয়াস নেই
চারপাশে মৃত্যুর ঘ্রাণ ঘিরে ধরে ম্লান করে দেয়
ব্যবহারিক বিকেল ৷ বাস্তবের শকুনেরা হারায় যদিও
বাসা বেঁধে ফেলে মানুষের বসতিতে ৷ শুধুই ছোরা বন্দুক
পরস্পরের দিকে তাক করে চাঁদমারি চর্চা চলে দিনরাত
দক্ষিণের যে হাওয়ার গুণগ্রাহী ছিলেন আমাদের পূর্বজরা
সে বাতাস এখন আগুনের আঁচ নিয়ে ঢোকে জনপদে
সমুদ্রের গর্জনের নিহিত ছন্দ ভেঙে যায়, বাড়ে ক্ষোভ
এসময় বিমর্ষ বেলাভূমি ধরে তুমি আর আমি
হাতে হাত ধরে কোথায় যাবো? কুড়িয়ে নেবার মতো
রঙিন নুড়িও যে পড়ে নেই বিধ্বস্ত তটের বুকে
প্রত্নচাঁদের আলোয় তোমাকে জীবনের কোমল প্রতিবিম্ব
দেখাবো বলে এনেছিলাম নির্জনে, ব্যর্থ হলো সে অভিসার

হাসি


তুমি ভীষণ বায়না ধরলে মেলায় যাবার জন্যে ৷ িক আর করা যাবে ৷ চলো ৷ ও মা সে কী ভীড়, কী ভীড়! তবুও ভালো লাগে ৷ মাঝে মাঝে তোমার সঙ্গে নিবিড় ছোঁয়াছোঁয়ি হয়ে যায় ৷ স্বপ্নের মতো ৷ কিন্তু হঠাৎ একি! তুমি কোথায়! শুধু অচেনা মানুষের মাথা ৷সামনে, পেছনে,পাশে ৷ তোমাকে দেখছি না ৷ হতাশ আমি

বাঁধন


এয়ারপোর্ট ৷সিকিউরিটি জোনে ঢুকে যাবার মুহুর্তে ছোট্ট শিশুটি দাদুর কোল থেকে কিছুতেই নামতে চাইছে না ৷ অনেক কষ্টে শিশুটির মা অর্থাৎ ভদ্রলোকের মেয়ে শিশুটিকে ছাড়িয়ে নিয়ে ভেতরে ঢুকে গেলো ৷ পুরোটা জায়গায় ফাইবার গ্লাসের বিভাজন ৷কাজেই একে অন্যকে দেখছে ৷কোলের শিশুটা বারবার দাদুর দিকে তাকাচ্ছে ৷আর মুখে অদ্ভুত শব্দ করে মার কোলে ছটফট করছে ৷ বোর্ডিং পাস নেওয়া এবং প্রথাগত কাজ সারার পর শিশুটির মা শেষবারের মতো বাবার কাছ থেকে বিদায় নেওয়ার জন্যে পার্টিশানের কাছাকাছি এসে দাঁড়লো ৷ ভদ্রলোক পার্টিশানে হাত রেখে নাতিকে ডাকছেন, দাদু,দাদু়়়়়়়়৷ কিন্তু কথা তো ওপারে পৌঁছুচ্ছে না৷ বাচ্চাটা কাঁচের দেয়ালের ওপারের দাদুর হাতটা ধরতে চাইছে ৷ ছুঁতে পারছে না ৷নিষ্ফল আক্রোশে আঘাত শুরু করছে কাঁচের দেয়ালে ৷ ঠাট়়়়়়়ঠাট়়়়়়়়়ঠাট়়়়়়়৷এই শব্দে ভদ্রলোকের বুকের দেয়ালেও যেন আঘাত হচ্ছে থাক়়়়়়়থাক়়়়়়়থাক়় ৷ভদ্রলোক ফাইবারের দেয়াল হাতড়ে নাতিকে ছুঁতে চাইছেন ৷ ওদিকে বিশাল গর্জন করে একটা বিমান রানওয়ে স্পর্শ করলো ৷

না


আজ শিষ্যগণের অধ্যয়ন সমাপন হয়েছে ৷ গুরু সায়ন্তনকে প্রণাম করে একে একে আশ্রম ত্যাগ করছে ৷ সমতটের কুমার অভিজিৎ এলো সবার শেষে ৷ ঋষিতনয়া অনাম্না দেখছিলো সব দূরে দাঁড়িয়ে ৷ কেন কে জানে আজ তার মন বড়ো বেশি উচাটন ৷ তপোবনের পাখিরা আজ কেন কাকলিমুখর নয়! গুরুকে প্রণাম করে অভিজিৎ ঘুরে দাঁড়ালো বাটিকার নির্গমনপথের দিকে ৷ অনাম্না ভাবছে, তাকে কি দেখছে না অভিজিৎ? দেখলেই বা কী! কোনোদিন তো কথা হয় নি তার সাথে ৷ আজ কী আর ! না ৷ কুমার তো তার দিকেই আসছে ৷ কী তোলপাড়শুরু হয়েছে অনাম্নার অঙ্গে ৷ আর্যকন্যা, আমি যাই এবার! কুমার! যাই নয় ৷ বলুন, আসি ৷এই শুধু কথা ৷ অভিজিৎ পেছন ফিরলো ৷ অনাম্না তার বক্ষাবরণাঞ্চলের প্রান্তদেশ বাঁ হাতে নিয়ে দাঁতে চেপে ধরে৷ ডান হাতটাঅর্ধমুষ্ঠি করে প্রসারিত করে অভিজিতকে যেন কী বলতে চায় ৷ বলতে পারে না ৷ একছুটে প্রবেশ করে কুটিরের ভেতরে ৷

রাইবার্তা


আমার গায়ের নামাবলি জুড়ে শুধু রাধানাম
জড়িয়ে ধরে আর আমার কলঙ্ক বাড়ায়
লম্পটতালিকায় এ নাম চিরখৎ রেখে গেলো
শুধু তোমার জন্যে রাই, আমি আজ চটুলের দলে
তমালের শেকড় উপড়ে নিলেও আমার প্রণয়
তোমার অনির্দেশ বিভ
র কাছে সমর্পিত
অন্তর্বাসে লেগে থাকা চুম্বনের গন্ধের মতো
বংশীবটের ডালে ডালে ঝুলে আছে আমার প্রেম
ভার্চুয়াল ভালোবাসায় শুধু পদাবলি লিখে যাই
সুরে সুরে জেগে থাকবে কেবল গন্ধময় রাধাঅঙ্গের
চাঁদনাওয়া রাতের সুরভিত বকরঙা জোছনা
ও শ্রীরাধে, আমার স্বপ্নের সই !
আমি আছি, আমি থাকবো, ধ্যানবিমুগ্ধ
ফেসবুকের ইনবক্সে তোমার মেসেজ আসে যদি
চিরায়ত পরকিয়ায় জীবনের মকরন্দ পাবো

হিসেব


প্রতি নিদাঘের নিঝুম সঙ্গমশেষে ফিরে যেতে আয়ানের অন্ধ অন্তরে , তুমি রাই ৷ তমালের ডাল আর শাখা জানে কত সহস্রবার দুলেছে নীরবে, হাওয়া দিয়ে তোমার স্বেদ শুষে নিতে ৷ আমারও ৷
আমিও কী পাই নি গোপন স্বাদ, নিভৃত শীৎকারগুঞ্জন আর আশ্লেষপেষণ লৌকিক সঙ্গীতের মতো বাতাসে ভেসে যাওয়া মধ্যরাতের শিস ৷
অলিখিত চুক্তির দিনলিপির মাঝে কখনো বা অষ্টসখির কেউ কেউ তোমার আড়ালে দিয়ে গেছে চটুল ইসারা,প্রলুব্ধ অপাঙ্গ ৷
শুধু বিশ্বাসে আমার বিচ্যুতি ঘটে নি সে কেবল তোমারই মায়াটানে আমার একান্ত সহেলি ৷ পাপ টেনে নিতে পারে নি আর কোনো নতুন ঠিকানায় ৷
তোমার তীর্যক হাসি নিঃশব্দে বলবে, ঘরভাঙানিয়া নাগরের ভয় কোথায়? পাপ তো সে কবেই করে বসে আছে!
আমি বৃন্দাবনী বান্দা হাঁ বলতে পারি না, অস্বীকারও নয় ৷শুধু বুকের ওপরে অদৃশ্য পাথর আরও চেপে বসে সময়ের আড়লে,পলায়নপটিয়সী সই ৷

বার্তা

আগামীকল্য গোলোকস্থ বাণিজ্যদপ্তরের প্রধানা অধিশ্বরী শ্রীমতী লক্ষ্মীদেবী কমলা তাঁর ধনভান্ডারের সুবর্ণকলস লইয়া সিন্ধুজল ( মর্ত্যের ফেনবতী নদী) হইতে উত্থিত হইবার দিনক্ষণ পূর্বাহ্নেই পঞ্জীকৃত হইয়া আছে ৷ এতোদ্দেশে দেবীর অনুগত ও টঙ্কাপ্রসাদার্থী বণিকগণ পূর্বাহ্নেই নদীতীরবর্তী ভূতপূর্ব চরভূমিতে সাতিশয় আগ্রহে শিবির স্থাপন করিয়া বিগত তৃতীয় দিবসাধিক কাল যাবত তথায় অবস্থান করিতেছেন ৷ অপরদিকে ফেনবতী নদীর দুই তীরবর্তী জনপদের শ্রীশ্রী ব্রহ্মানন্দ গিরি মহারাজের আশীর্বাদধন্য মনুর সন্তানবর্গ এতদিন যে ' ওই পারেতে সর্বসুখ আমার বিশ্বাস ' এইরূপ বিলাপ করিয়া আক্ষেপ করিতেছিলেন তাহা প্রশমনের সুবর্ণ সুযোগ প্রাপ্তির আশায় পরস্পর বিপরীত তীরবর্তী জনপদে পদার্পন করিয়া চক্ষুকর্ণের বিবাদভঞ্জন করিবার প্রস্তুতি গ্রহণ করিতেছেন ৷এবম্বিধ বার্তা গত সায়াহ্ণে দেবরাজ ইন্দ্রের দপ্তরে পৌঁছাইবামাত্র ইন্দ্রপ্রস্থে সাজ সাজ রব পড়িয়া গিয়াছে ৷ মহারাজ ইন্দ্রদেবের নির্দেশ ইতিমধ্যে অস্ত্রাগার হইতে কয়েক শকট বজ্র নামক মিসাইল রওনা হইয়া গিয়াছে ৷ স্বর্গভূমির জলসম্পদ দপ্তরের প্রধানাধিপতি বরুণদেবকে তলব করিয়া প্রয়োজনীয় নির্দেশও দিয়াছেন ইন্দ্রদেব ৷ স্বর্গের গোলোকধাম ও নন্দনকাননকে সমুহ আক্রমন হইতে রক্ষা করার লক্ষে বিদ্যুৎসকলকে ইতিমধ্যে মর্ত্যলোকের কাজকর্ম গুটাইয়া তথায় ব্যুহরচনার কাজে নিয়োজিত করা হইয়াছে ৷ সর্বশেষ প্রাপ্ত সংবাদে জানা গিয়াছে ফেনবতী নদীর উজানে ও উত্তরাংশে বজ্র নিক্ষেপসহিত আগামীদিবসে তাঁহার পার্বন হইলেও রাজাদেশ শিরোধার্য মনে করিয়া বরুণদেব নিতান্ত অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাঁহার কর্মতৎপরতা শুরু করিয়া দিয়াছেন ৷ ফলে আগামী দিবসে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষ যারপর নাই ক্ষতির সম্মুখীন হইবেন বলিয়া আশঙ্কা করিতেছেন ৷

প্রভাতসঙ্গীত


ঈশ্বরে বিশ্বাসের ব্যাপারটা আমার কেমন গোলমেলে মনে হচ্ছে ৷বিশ্বাসে কেষ্টঠাকুর আমার দোরগোড়ায় চলে আসবেন বলা হলেও আমি এ যাবত৷কোনো সুফল দেখিনি ৷ উপরন্তু আমার ষড়ভুজ ঘরের ছয় জ্যামিতিক কোণে সিঁদ কেটে ছয়জন ধোপদরস্ত চিটফান্ড এজেন্ট ঢুকে পড়ে ৷
এরা আমার সামনে ঈশ্বরের চেয়েও উঁচু সিংহাসনের স্বপ্ন দেখাতে চায় ৷এখন নাকি বিশ্বায়নের যুগ ৷আমাকে লহমায় ঘুরিয়ে আনে সব আন্তর্জাতিক শহর ৷ওখানে সুখের দল প্রজাপতির মতো উড়ে উড়ে মানুষ খোঁজে ৷ আমার মতো লোকের নাকি ভীষণ কদর ৷ ওদের বিশেষ ক্যামেরায় আমার কৌমার্য ফুটে উঠেছে ৷
এদের এমন আরো বহুতর কোকিলকন্ঠী আকর্ষক ব্রজবুলিতে আমি মরে গেলাম ৷ এক্কেবারেই মরে গেলাম ৷ এখন আমি একটা জিন্দা লাশ হয়ে লোকালয়ে বেওয়ারিশ ঘুরছি, ফিরছি ৷পরের জা'গা পরের জমিনে যে ঘর আমি বানিয়েছিলাম গুরু গো! সবই এখন সেই ছয় দালালের দখলে ৷
আমি এখন দুবেলা দাহকাষ্ঠ আহরণ করে নিজের চিতা সাজিয়ে চলেছি ৷ বিশ্বাসে গোবিন্দ গোঁসাই নকল শ্রীচরণ বাড়িয়ে দেবেন কিনা সেই দ্বন্দ্বে আছি ৷

হোলিগান


অশোকানন্দ রায়বর্ধন
বেনামী কুটিরের গায়ে আলপনা এঁকে রেখে
বর্ষবিদায়ের পথে আবিরের চালচিত্র--
কতোটা ভালোবাসা রেখে গেলে শান্তি নামে ৷
সকাল সন্ধ্যার আঁটিবাঁধা খুচরো সংসারের তালিকায়,
তালুতে দাদনের স্বরলিপি সুরের জন্যে উসখুস ৷
নেতিয়ে পড়ে মেজাজি মালিকের জবাকুসুম চোখের সামনে,
যার গায়ের জামায় বিগত হোলির আদিম গন্ধ ৷
হোলি তবু আসে ৷ আসে প্রতি সন ৷
তার ঝোলায় থাকে প্রাচীন মেইজাইয়ের উপহার,
বিলোবার পরিবেশ পায় না ৷
অথবা খুঁজে পায় না কোনো পবিত্র সূতিকাঘর ৷

চিহ্ন

এভাবেই মুছে যাই, মুছে যেতে হয়
যারা ভালোবাসে আর কাছে টেনে নেয়
তাদেরই কেউ কেউ মুছে ফেলে আমাকে
আর অন্য যারা ভাসমান দোনামনায় আছে
তারাও অবসরবিনোদনের কালে পাঁজিপুথি দেখে
খুঁজছে মাহেন্দ্র কিংবা অমৃতযোগ
কখন ছেঁটে ফেলা যায় আমাকে
এইসব মোছামুছি আর ঘষাঘষির ফলে
আমার শরীরে এখন চুম্বনচিহ্নের মতো
শুধু ফ্যাকাশে ইরেজারের ঘষটানো দাগ

দামিনী


আহা, ভেসে ওঠে অন্তহীন দীপালিকার সারি
তাহাদের কবোষ্ণ আহ্লাদ বিসর্পিল আন্দোলন
হিমেল বায়ুপ্রবাহ নৃত্যের সমিধ সাজিয়ে দিয়ে যায়
অচেনা নর্তকীর সমবেত শরীরী হিল্লোলে যে আবাহন থাকে
তাতে শুধু চোখের স্নান
শরীরের ঘন নির্যাস নেবার বশীকরণের টানে
ছুটে গেলে, ছুঁতে গেলে এই শৈল্পিক অগ্নিরেখার
কোমল হিন্দোল স্তব্ধ হিমরাতেও দাবানল হয়ে ওঠে
খান্ডবগ্রাসে খাক করে দেবে নষ্ট ও কামুক শরীর
বাহিরে ছন্দহীন শিশিরের অবিরাম পতনের মূর্ছনায়
দামিনীরা জেগে থাকে বুকে আগুনের আবলি নিয়ে
এক আসন্ন ক্রুদ্ধ রাতে তো জেগে উঠবে সমুহ সাহস নিয়ে